সবার মনে শঙ্কা পারবে কী সমতা ফেরাতে লাল-সবুজরা। জিমির দুর্দান্ত শট বল জালে জড়ালে সকল শঙ্কা উড়ে যায়।
সেই সাথে ম্যাচটিও বগলবন্দী করে নেয় স্বাগতিকরা। শুটআউটেও রোমাঞ্চ আর উত্তেজনা। প্রথম পাঁচ শুটআউটে ৩-৩ ড্র। এরপর শেষ সাডেন শুট আউটে গোলকিপার জাহিদের অসাধারণ সেভে ম্যাচ নিজের করে নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় রাউন্ডের পঞ্চম স্থান অর্জন করে উল্লাসে ফেটে পড়ে সবাই। হকি ওয়ার্ল্ড লিগ রাউন্ড-২ তে পঞ্চম হয় বাংলাদেশ।
জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত পঞ্চম স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ঘানার পাওয়ার প্লের তাল সামলতে পারেনি বাংলাদেশ। খেলার নির্ধারিত সময় ৩-২ গোলে এগিয়ে ছিল ঘানা। নিয়মানুযায়ী পেনাল্টি কর্নার শেষ করলেই বাজবে শেষ বাঁশি, এমন মুহূর্তে রাসেল মাহমুদ জিমি ৩-৩ গোলে সমতা এনে বাংলাদেশকে নিয়ে যান শুটআউটে।
খেলার প্রথম পাঁচ মিনিট কাটে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে। বাংলাদেশের আক্রমণে সারোয়ার ও অধিনায়ক জিমি দুই প্রান্তে নেতৃত্ব দেন, ছয় মিনিটে জিমির হিটে কৌশিক ফ্লিক করতে ব্যর্থ হন। আট মিনিটে ম্যাচের প্রথম পেনাল্টি কর্নার অর্জন করে ঘানা। কিন্তু তাদের পিসি স্পেশালিস্ট জনি বতসিয়ো বল মারেন পোস্টের বাইরে। ১৪ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে চয়নের নেয়া জোরারো হিটে ফ্লিক করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সারোয়ার, স্টিকে বলে সংযোগটা হয়নি।
১৬ মিনিটে দ্বিতীয় পেনাল্টি কর্নার পায় ঘানা। জনি বতসিয়ো এবার ব্যর্থ হননি। কোনাকুনি হিটে বল বোর্ডে আছড়ে ফেলেন, টুর্নামেন্টে নিজ ১৪তম গোল করে দলকে এগিয়ে নেন।
১৯ মিনিটে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম পেনাল্টি কর্নারে লক্ষ্যভেদ করেন চয়ন। জিমির পুশ, রানার স্টপে ড্র্যাগ করেন তিনি। গোলরক্ষক ইউজিন আচিমপঙ কোনো সুযোগই পাননি। ২১ মিনিটে একই কম্বিনেশনে চয়ন করেন দ্বিতীয় গোল। এবার অবশ্য ড্র্যাগ করেননি তিনি, নেন নীচু হিট, বল আঘাত হানে বোর্ডে।
২৬ মিনিটে আবারও পেনাল্টি কর্নার পায় বাংলাদেশ, তবে এবার চয়নের ড্র্যাগের গতিপথ আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন ইউজিন, গ্লাভস দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন তিনি।
২৯ মিনিটে লিউক দামালির পেনাল্টি কর্নারে জাহিদ পরাস্ত হলেও গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে দিয়ে দলকে রক্ষা করেন ডিফেন্ডার আশরাফুল ইসলাম। ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় জিমি চয়নরা।
তৃতীয় কোয়ার্টারে বাংলাদেশ-ঘানা উভয়েই শক্তি সঞ্চয় করে খেলার দিকে মনোযোগী হয়। কিন্তু ৪৩ মিনিটে ম্যাকিউ দামালির হাফ লাইন থেকে করা প্রচণ্ড হিটে ফ্লিক করে সমতা আনেন আকাবা এলিকেম, বিশ্বমানের গোল ছিল এটি। ২-২ গোলে সমতায় শেষ হয় তৃতীয় কোয়ার্টার।
৪৯ মিনিটে গোলরক্ষক জাহিদ বাঁচান দলকে। পরপর দুইবার মাইকেল বেইডেনের হিট ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচে পিছিয়ে পড়া থেকে রক্ষা করেন তিনি। শেষ কোয়ার্টারে জয়ের নেশা প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে। বাংলাদেশ হয়ে পড়ে কোনঠাসা। ৫২ মিনিটে পেনাল্টি স্ট্রোক পায় ঘানা। ম্যাথিউ দামালি স্পট থেকে গোল করতে ভুল করেননি। ম্যাচে ফেরার আট মিনিট সময় পায় বাংলাদেশ।
শেষ মিনিটে পেনাল্টি কর্নারে চয়নের হিট ঘানা গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলেও সারোয়ার তাতে জোরালো হিট নেন। আবার গোলরক্ষক তা ফেরান, কিন্তু জিমি বল পুশ করে পাঠিয়ে দেন পোস্টের ভেতরে। শুট আউটে যায় ম্যাচ। প্রথম পাঁচটির মাঝে ৩-৩ ছিল গোল। তাই সাডেন ডেথে য়ায় শুটআউট। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, ১২ মার্চ ২০১৭
জেএইচ/এমআরপি