ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

১৪ বছর ধরে বন্ধ ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৭
১৪ বছর ধরে বন্ধ ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্র পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকি নিয়ে থাকছেন এক সহায়-সম্বলহীন রোগী। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: ভবনের কলাম ও ভিমগুলো ভেঙে রড বের হয়ে আছে।  ছাদের ঢালাই ধসে মেঝেতে পড়ছে। রডগুলোর টেমপ্রেসার নষ্ট হয়ে গেছে। রুমের দেওয়ালের বেশ কিছু স্থানে ফাটল ধরে খসে পড়ছে। ভবনটি হয়েছে পরিত্যক্ত।

বাগেরহাটের একমাত্র ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্রটি এমন অবস্থা নিয়ে ১৪ বছর ধরে বন্ধ আছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভূতুড়ে এ ভবনে সহায়-সম্বলহীন এক রোগী এসে থাকছেন কয়েক মাস ধরে।

তারও মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে।

এটি ছিল বাগেরহাটের একমাত্র ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্র। এখানে ইনডোর ও আউটডোর- দুই ধরনের শরীরচর্চা ও খেলাধুলার সুযোগ ছিল। ইনডোরে ছিল ক্যারাম, দাবা ও টেবিল টেনিস। আউটডোরে ছিল বক্সিং, ভারোত্তোলন, যোগাসনসহ অনেক কিছু। সারাদিন খেলাধুলা ও অনুশীলন করতেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও যুবকরা। সন্ধ্যার পর থেকে আসতেন বিভিন্ন পেশাজীবীরা। ক্রীড়াপ্রেমীদের পদচারণায় এভাবেই সারাদিন থাকতো উৎসবমুখর।

বাগেরহাটের যুবকদের ক্রীড়া ও শরীর চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে ১৯৭৭ সালে শহরের পিএনজি মাঠে পৌরসভার জমিতে এটি স্থাপিত হয়। তারপর থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে চলেছে।

২০০৩ সালে যুবকেন্দ্রের পাশে পিএনজি মাঠে স্বাধীনতা উদ্যানের মঞ্চ ও ছাউনি করার সময় যুবকেন্দ্রের অফিসকক্ষটি ভেঙে ফেলে জেলা পরিষদ। এখানকার সরঞ্জামাদি ম্যাকফারসন পাবলিক লাইব্রেরি ও রোভার স্কাউট ভবনে রাখা হয়। তখন ভবনের ছাদ ফেটে অচল হয়ে যায় কেন্দ্রটি। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত সচল করা যায়নি। মাঝে ২০০৭ সালে সিডর পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসনের অনুরোধে রেডক্রিসেন্টের ত্রাণের গুদাম হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হয় এটিকে।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ সভাপতি, বাগেরহাট ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্র পরিচালনা কমিটির উপ-পরিচালক শেখ হায়দার আলী বাবু বাংলানিউজকে  বলেন, ‘কেন্দ্রটি বাগেরহাটের মানুষের প্রাণের প্রতিষ্ঠান ছিল। এখানে অনুশীলন করে জাতীয় পর্যায়ে ভালো করেছেন অনেকে। জাতীয় পদকপ্রাপ্ত বক্সার এনায়েত, পারভেজসহ আরও অনেকে এখানে অনুশলীন করতেন। কিন্তু দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বাগেরহাটের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে’।

‘যুবকেন্দ্রটির ভবন সংস্কারসহ ব্যবহারের উপযোগী করতে ১৫ লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। শরীরচর্চার সরঞ্জামাদি কিনতে লাগবে আরও পাঁচ লক্ষাধিক টাকা। আমরা অনেকবার উদ্যোগ নিয়েও এটিকে সচল করতে পারিনি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যায়ামাগারটি চালু করা গেলে বাগেরহাটের যুব সমাজ উপকৃত হবে’।

পরিচালক অধ্যাপক বুলবুল কবির বলেন,  ‘মূলত অর্থাভাবেই এটিকে সচল করতে পারিনি। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। সচল করতে তিনি আবেদন করতে বলেছেন। যতো দ্রুত সম্ভব আমরা আবেদন করবো’।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সরদার সেলিম আহমেদ বলেন, ‘এটিকে সচল করার চেষ্টা করছি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে আবেদন করে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। শিগগিরই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে’।

পদাধিকার বলে ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্রটির সভাপতি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখবো- কি অবস্থায় আছে। তারপর যতো দ্রুত সম্ভব এটিকে সচল করার ব্যবস্থা করবো’।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।