ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

টয়লেট আছে, দরজা নেই, সভাপতি ও জিএস’র কক্ষই নেই!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৭
টয়লেট আছে, দরজা নেই, সভাপতি ও জিএস’র কক্ষই নেই! ৩২ বছর বছর এশীয় হকির আয়োজক বাংলাদেশ; ছবি : বাংলানিউজ

ঢাকা: ৩২ বছর পর এশিয়া কাপ হকির আয়োজক হওয়ার অনন্য সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। সেই সুযোগ পেয়েও তা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারলো না দেশের হকির এই সর্বোচ্চ সংস্থাটি। কেননা এশিয়া কাপের গোটা আয়োজনটাই ম্লান হয়ে গেছে চরম অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা।

এজন্য অবশ্য তাদের দায়ী করা উচিত হবে না। এর পুরো দায়ভার গিয়ে বর্তাচ্ছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) অদক্ষ কর্মকর্তাদের ঘাড়ে।

এশিয়ার হকির শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইকে সামনে রেখে তারাই পুরো স্টেডিয়াম সংস্কার ও ফ্ল্যাড লাইট স্থাপন বাবদ ১৮ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। পরিতাপের বিষয় হলো, এশিয়া কাপ হকি শুরু হলেও টুর্নামেন্টের আয়োজন পুরোপুরি শেষ করতে পারেনি এনএসসি। এখনও চলছে প্রস্তুতির কাজ।

আসুন দেখে নিই তাদের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনার ছাপ কোথায় কোথায় লেগে আছে।

স্টেডিয়ামের ভিআইপি প্রেসবক্স, ক্লাব হাউস, কমেন্ট্রি বক্স, সম্প্রচার কক্ষ মিলে প্রায় ২ হাজার মানুষের বসার ব্যবস্থা। অথচ এতো এতো মানুষের জন্য টয়লেট মাত্র ৩ টি! পুরুষদের জন্য ২টি। আর নারীদের জন্য মাত্র ১টি।

সাকুল্যে তিনটি টয়লেট তাও একটির দরজা বন্ধ।  তাছাড়া লেখা নেই কোনটা নারী আর কোনটা পুরুষের; ছবি : বাংলানিউজপুরুষদের ২টি টয়লেটের একটির আবার দরজাই নেই। পাশেই প্রক্ষালন কক্ষ। কিন্তু সেখানে কোনো ইউরেনাল নেই। আর নারীদের জন্য যে টয়লেটটি রয়েছে সেটি বন্ধ। তাছাড়া টয়লেটের কোথাও উল্লেখ করা নেই, কোনটি নারী এবং কোনটি পুরষদের ব্যবহারের জন্য। ভুলবশত কোনো পুরুষ নারীদের কক্ষে ঢুকলেই সর্বনাশ!

বিকল্প টয়লেট ব্যবহারের জন্য ফেডারেশনের প্রশাসকের কক্ষে যেতে চাইলেও তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কেননা সেখানে পুলিশ সদস্যরা সিসি টিভি’র ফুটেজ দেখার দায়িত্ব পালন করছেন। আরও মজার ব্যাপার হলো, ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস)’র কক্ষ বলতেও কিছু নেই সেখানে।

সাধারণ সম্পাদকের কক্ষের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এশিয়ান হকি ফেডারেশনের প্রধান নির্বাহী তৈয়ব ইকরামের জন্য। সেই কক্ষের দরজায় এতদিন তার (সাধারণ সম্পাদকের) নেমপ্লেট থাকলেও এখন তৈয়ব ইকরামের নেমপ্লেট শোভা পাচ্ছে। আর সভাপতির কক্ষটি প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জন্য। কেননা ২২ অক্টোবরের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মাঠে আসার কথা রয়েছে।

ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাদেক আক্ষেপ করে বললেন, ‘আমার কোনো রুমই নেই। ’

কক্ষ নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের কথায় অসহায়ত্ব ফুটে উঠলেও বস্তুত তার সেই দৈন্যদশা দেখার কেউ নেই। কেননা হকির পাশেই গড়ে ওঠা রোল বল ফেডারেশন হকি ফেডারেশন সংলগ্ন দুটি কক্ষ দখল করে রেখেছে। ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে এত দামি স্পেডিয়াম করেও তারা দুটি স্থানেই অবস্থান নিয়েছে। অথচ এই জায়গাটি ছেড়ে দিলে হকি ফেডারেশনের কক্ষের দৈন্য অনেকাংশেই ঘুচতো।

হকি ফেডারেশনের দৈন্যর ছাপ লেগে আছে প্রেসবক্সেও। প্রথম সারিতে বসা সংবাদকর্মীরা ছাড়া পেছনের সারিতে বসা সংবাদকর্মীদের কেউই খেলা দেখতে পারছেন না। তাছাড়া প্রেসবক্সে জায়গা কম হওয়ায় বসার চেয়ার টেবিলগুলো এতটাই ঘনসন্নিবেশিত যে, একটু অসতর্ক চলাচলে ভূপাতিত হতে পারে যে কোনো সংবাদকর্মীর প্রয়োজনীয় ল্যাপটপ ও ক্যামেরা!বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৭
এইচএল/এমএমএস/জেএম 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।