নারীত্ব প্রমাণ করতে বিপদে পড়তে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই বার অলিম্পিকজয়ী দৌড়বিদ ক্যাসটার সেমেনিয়াকে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে মহিলাদের ৮০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগীতায় তিনবারের বিজয়ী ৩১ বছর বয়সী এই অ্যাথলেট সম্প্রতি একটি টিভি চ্যানেল এইচবিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের সাথে ঘটে যাওয়া বিরূপ সেই কাহিনী তুলে ধরেন।
পুরুষদের মতো দেহের অধিকারী হওয়ার কারণে ২০০৯ সালে একটি প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করার পর নারীত্ব প্রমাণের পরীক্ষা দিতে বলা হয় সেমেনিয়াকে। ১৮ বছর বয়স থাকা অবস্থায় সেবার ৮০০ মিটার অতি দ্রুত দৌড়ে শেষ করেন এই অ্যাথলেট। এতেই সন্দেহ জাগে বিচারকদের।
এই ব্যাপারে সাক্ষাৎকারটিতে সেমেনিয়া বলেন, ‘তাদের মনে হয়েছিল আমি মহিলা নই। আমার সম্ভবত পুরুষাঙ্গ রয়েছে। বিশ্বাস করতে চাইছিলেন না তারা তাদের বলেছিলাম আমার কোনো সমস্যা নেই, আমি মেয়ে। ’
নিজের নারীত্ব প্রমাণ করতে গোপনাঙ্গ দেখাতেও রাজি হয়েছিলেন সেমেনিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি তাদের বলি, আপনারা চাইলে নিজেকে নারী হিসেবে প্রমাণ করতে পারি। দেহ দেখাতেও তৈরি ছিলাম। ওদের বলেছিলাম, আমার গোপনাঙ্গ দেখাতেও সমস্যা নেই। ’
এদিকে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সেমেনিয়ার শারীরিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, তার শরীরে ডিম্বাশয় বা জরায়ুর অস্তিত্ব নেই। তার শরীরে পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরনের প্রভাব সাধারণ মহিলাদের থেকে প্রায় তিন গুণ বেশি। এর ফলে তার পেশির গঠন এবং শক্তি খানিকটা পুরুষদের মতো।
পরীক্ষা শেষে ২০১১ সালে শরীরে টেস্টোস্টেরন পরিমাণ কমানোর জন্য সেমেনিয়াকে মেডিসিন নিতে আদেশ দেয় বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন। এই প্রসঙ্গে সেমেনিয়া বলেন, ‘সেই মেডিসিন নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি। ওজন বাড়তে শুরু করে। আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। মনে হত, যে কোনও সময় হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। ’
সেমেনিয়া বলেন, ‘আমি শুধু দৌড়তে চাইতাম। ১৮ বছর বয়সেই ঠিক করে নিয়েছিলাম অলিম্পিক্সে পদক জিততেই হবে। এটাই আমার এক মাত্র পথ ছিল। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২২
আরইউ