ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তারার ফুল

তিন টপ মডেলের গল্প

কামরুজ্জামান মিলু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫
তিন টপ মডেলের গল্প (বাঁ থেকে) মুন, মিথিলা ও লামিয়া/ছবি: নূর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

তিনজনেরই কাছে এ যেন স্বপ্নের রাত। সাধারণ মেয়ে থেকে তারকা হয়ে উঠেছেন যে! এবারের ‘ভিট-চ্যানেল আই টপ মডেল’ প্রতিযোগিতার হাত ধরে বিনোদনের স্বপ্নিল আকাশে ডানা মেলে উড়ে বেড়ানোর আশা এই তিন নতুন তারার চোখে-মুখে।

২৫ জানুয়ারি তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল চ্যানেল আইয়ের কার্যালয়ে।

সবাইকে পেছনে ফেলে বিজয় মুকুট জিতেছেন সুমাইয়া আঞ্জুম মিথিলা। তার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী। থাকেন গাজীপুরে। পড়াশোনা করেন উত্তরার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্চেন্ডাইজিং বিষয়ে। একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে থাকেন বান্ধবীদের নিয়ে। কথাবার্তা সাবলীল, চটপটে। তার হাসিমুখ সহপাঠীদের কাছেও প্রিয়। তাই তারা প্রায়ই মিথিলাকে পরামর্শ দিতেন সুন্দরী প্রতিযোগিতায় নাম লেখাতে। মা হালিমা খাতুন হ্যাপিকে জানিয়ে টপ মডেল হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে সত্যি সত্যি নাম লিখিয়ে ফেললেন তিনি। খবরটা প্রথম এক মাস বাবা আজিজুর রহমান জানতেনই না। তিনি গাজীপুর ক্যান্টনমেন্টে চাকরি করেন। শুরুতে রেগে গেলেও ধীরে ধীরে মেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেখে বাবাও খুশি হয়েছেন।


বিজয়ী হওয়ার সুবাদে মিথিলা পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন পাঁচ লাখ টাকা। এই অর্থ দিয়ে কী করবেন তা এখনও ভাবেননি তিনি। কেনাকাটা করতে বেশি ভালো লাগে তার। লম্বা ছেলেদের দেখলেও আনন্দ হয় মিথিলার। একটু বেশি উচ্চতার মডেল বা নায়কদের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। তার কথায়, ‘মায়ের উৎসাহে আজ আমি এই অবস্থানে। তার পরামর্শে সবকিছু করতে চাই। মডেলিংকে ঘিরেই আমার চিন্তা-ভাবনা। বিজ্ঞাপন ও ফটোশুটে আগ্রহ বেশি আমার। আর একটু শিখে অভিনয় করতে চাই। সেটা নাটক হোক বা চলচ্চিত্র। ’

মিথিলার কথা শেষ হতেই পাশে এসে বসলেন প্রথম রানারআপ সাদিয়া ইসলাম লামিয়া। ঢাকার মিরপুরে বেড়ে উঠেছেন তিনি। বাবা জাফর হোসেন অনেক বছর ধরে প্রবাসী, মা শিউলি আক্তার লিজা গৃহিণী। তাদের একমাত্র সন্তান লামিয়া। পড়াশোনা করছেন মিরপুর বাংলা কলেজে এইচএসসিতে দ্বিতীয় বর্ষে। প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছিলেন মডেল হওয়ার ইচ্ছা থেকে। তিনি বলেন, ‘আমার পছন্দের মডেল তানিয়া আহমেদ আপু। আর সুবর্ণা মুস্তাফা আপুকে অনেক ভালো লাগে। তার মতো অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখি। র‌্যাম্পে নিয়মিত ক্যাটওয়াকের পাশাপাশি অভিনয় করতে চাই। ’

লামিয়ার মতো দ্বিতীয় রানারআপ জান্নাতুন নূর মুনের বাবাও (মোশাররফ হোসেন) থাকেন দেশের বাইরে (সৌদি আরব)। উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চির নোয়াখালির এই মেয়ে জানালেন, ‘আমাদের প্রশিক্ষক ছিলেন লুনার আপু। আমি আগে থেকেই তার ভক্ত। তার ফ্যাশন শোগুলো সরাসরি দেখেছি কয়েকবার। ইমি ও পিয়া আপুর কাজ ভালো লাগে। প্রায়ই ভাবতাম কবে তাদের মতো নামি মডেল হতে পারবো। সে ইচ্ছা থেকেই এই প্রতিযোগিতায় এসেছিলাম। ’

শুরুর দিকে মুনের ওজন ছিলো বেশি। প্রতিযোগিতার আসার পর নিয়ন্ত্রণ করেছেন তিনি। শিখেছি অনেক কিছু। মিথিলার মতো মুনেরও ছোট বোন আছে। মিথিলার ছোট বোন নাবিলা পড়েন নবম শ্রেণীতে আর মুনের ছোট বোনের নাম নিঝুম। তার মা সাবিনা ইয়াসমিন গৃহিণী। নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ বিষয়ে পড়াশোনা করছেন মুন। তিনি বলেন, ‘এ প্রতিযোগিতার জন্য একটি সেমিস্টার করতে পারিনি। তবে আফসোস নেই। কারণ এখানে অনেক কিছু পেয়েছি। সারাদেশের মানুষ আমাকে চিনেছে। চেনা-অচেনা ফোন আসছে। এসব তো কম পাওয়া না। ধন্যবাদ দিতে চাই চ্যানেল আই পরিবারকে ও আমার মাকে। আগামীতে মডেলিংয়ের পাশাপাশি অভিনয়ে মনোযোগী হতে চাই। ’

গত বছরের নভেম্বর থেকে জানুয়ারি। ক্যাম্পে থাকা, রোজ সকালে আরামের ঘুম ভেঙে গ্রুমিং ক্লাস করাসহ বেশ বেশ পরিশ্রমও করতে হয়েছে তাদের। সেই কষ্টের ফল পেয়েছেন তারা। তাই মিলিয়ে গেছে ক্লান্তির চিহ্ন! প্রতিযোগিতা চলাকালে ১১ জানুয়ারি শীর্ষ সাত প্রতিযোগী যান শ্রীলঙ্কায়। ফিরেছেন ১৪ জানুয়ারি। সেখানে ফটোশুট, ক্যাটওয়াকসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে ছিলেন মূল তিন বিচারক নোবেল, তানিয়া আহমেদ ও কানিজ আলমাস খান। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গিয়ে মুন বললেন, ‘তাদের মতো তারকার সঙ্গে এভাবে সামনাসামনি আড্ডা হবে ভাবিনি। ’

স্বপ্নিল আকাশে এই তিন নতুন তারা এগিয়ে যাবেন আপন ছন্দে, সে আশা আয়োজক ও তাদের প্রশিক্ষকদের। বাংলানিউজের পক্ষ থেকে তাদের জন্য রইলো শুভকামনা ও অভিনন্দন।

বাংলাদেশ সময় :  ১৩৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ