অপর্ণা ঘোষ মেয়েটাকে দেখলেই বোঝা যায় তিনি পরিপক্ক। তবুও নিজের বয়সের চেয়েও পরিপক্ক চরিত্রগুলোতে কীভাবে যেন অনায়াসে মানিয়ে যান তিনি।
গাজী রাকায়েত পরিচালিত ‘মৃত্তিক মায়া’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ২০১৩ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা সহ-অভিনেত্রী বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন অপর্ণা। তিনি বললেন, ‘এই প্রাপ্তি বিশাল। এটা হাতে পাওয়ার পরও বিশ্বাস করতে পারছি না! মাঝে মাঝে মনে হয়, আসলেই কি আমি এটা পেয়েছি?’
জাতীয় পুরস্কার সবার কাছেই কাঙ্ক্ষিত। তবে এখানেই সব পাওয়া মনে করছেন না অপর্ণা। তার জন্য আবার এই সম্মান জয়ের সম্ভাবনা খুলে দেবে ‘সুতপার ঠিকানা’।
মা দিবস উপলক্ষেআগামী ৮ মে শুধু রাজধানীর সিনেপ্লেক্সগুলোতে মুক্তি পাচ্ছে প্রসূন রহমান পরিচালিত ছবিটি। এতে নাম ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। এটি উৎসর্গ করা হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার সব নারীকে। সরকারি অনুদানে নির্মিত ছবিটি প্রযোজনা করেছে ইমেশন ক্রিয়েটর।
‘সুতপার ঠিকানা’য় সুতপা চরিত্রে কিশোরী থেকে বৃদ্ধ সময়ের (১৭-৪৭) সাজগোজে দেখা যাবে অপর্ণাকে। গল্পটা বাংলাদেশের নারীজীবন নিয়ে। পরিচালক বিভিন্ন বয়সের জন্য বিভিন্ন মেয়ে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। তবে অর্পণার অভিনয়শৈলী তাকে মুগ্ধ করে। তাই বিভিন্ন বয়সী পাঁচ চরিত্রে তাকেই সুযোগ দেন তিনি। ছবিটি প্রসঙ্গে অর্পণা বাংলানিউজকে বলেন, ‘স্ক্রিপ্টটা পড়ার পর কেঁদে ফেলেছিলাম। কারণ একটা নারীর গল্প তো! আমি দেখে এসেছি খালা ও নানীর জীবন। এটা যেন সেই চেনা গল্প। প্রতিটি নারীরই হয়তো এমন জীবন কাটাতে হয়। ছবিটিতে কাজের জন্য অনেক সময় দিয়েছি। ’
বিভিন্ন বয়সী চরিত্র, তাই রূপসজ্জা ও সাজগোজে পরিবর্তন রাখতে হয়েছে অপর্ণাকে। শৈশবের চরিত্রটির কাজ হয়েছে মানিকগঞ্জে। এরপর সিলেটে ও ঢাকায় দৃশ্যধারণ করা হয়। তিনি বলেন, ‘প্রসূন দা আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। গান রেকর্ডিংয়ের সময় কুমার বিশ্বজিতের স্টুডিওতে আমিও গিয়েছিলাম। প্রসূনদা বলেছিলেন- এটা আপনারও ছবি। আমিও বিশ্বাস করি এটা আমার নিজের ছবি। ’
বড় পর্দার পাশাপাশি ছোট পর্দায়ও সমানতালে চলছে অপর্ণার বিচরণ। হাসান মোর্শেদের ‘আদর্শলিপি’, গোলাম সোহরাব দোদুলের ‘পাল্টা হাওয়া’, মাবরুর রশিদ বান্নাহ ‘হাউজ নাম্বার ৪৪’ ধারাবাহিকগুলোর কাজ করছেন। এ ছাড়া রবীন্দ্রনাথের ‘নিস্কৃতি’ গল্প অবলম্বনে কাওনাইন সৌরভের পরিচালনায় ‘প্রেম ও পিঞ্জর’ নামের একক নাটকে অভিনয় করেছেন। রবীন্দ্রজয়ন্তীতে এটি প্রচার হবে।
চট্টগ্রামের মেয়ে অপর্ণা ২০০৬ সালে ঢাকায় এসে ‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ছিলেন সেরা চারে। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। নাটক-টেলিছবির পাশাপাশি ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ এবং ‘মেঘমল্লার’ ছবিতেও অভিনয় করেছেন। এর পর কোন চলচ্চিত্রে দেখা যাবে। এমন প্রশ্নের জবাবে অর্পণার উত্তর, ‘আমার কোনো পরিকল্পনা নেই। আর এখন পর্যন্ত খারাপ কোনো স্ক্রিপ্ট আমার কাছে আসেনি। এটা আমার জন্য সৌভাগ্যের। যা-ই করি না ভালোই হবে, এ আত্মবিশ্বাসটা আছে আমার। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, ৬ মে, ২০১৫
এমকে/জেএইচ