দ্বিতীয় কিস্তি মুক্তির আগে জয়া আহসানকে নিয়ে ঘোষণা এলো ‘পূর্ণ্যদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ৩’-এর। এ খবরে খুশি দুই বাংলার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
সোমবার (৪ এপ্রিল) মুক্তি প্রতীক্ষিত বিভিন্ন চলচ্চিত্র ও অন্যান্য বিষয়ে জয়ার সঙ্গে কথা হলো এফডিসির ৮ নম্বর ফ্লোরে। এদিন অন্যান্য তারকাশিল্পীর সঙ্গে তিনি ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ২’-এর অডিও অ্যালবামের মোড়ক খোলেন। পড়ুন তার সাক্ষাৎকার-
বাংলানিউজ: ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি’র সঙ্গে দ্বিতীয় কিস্তির পার্থক্য বা মিল কোথায়?
জয়া আহসান: প্রথম ছবিটা ছিলো ফ্যামিলি ড্রামা। আর এবারেরটা একেবারে প্রেমের গল্প। এখানে ক্রিকেট ও মডেলিং দুটো উপকরণ হিসেবে এসেছে। গল্পটা ভালো। কবির বকুলের লেখা ও শওকত আলী ইমনের সুরে গানগুলো বেশ ভালো। আগের চেয়ে এ ছবিটা অবশ্যই মানসম্পন্ন।
বাংলানিউজ: কিন্তু সিক্যুয়েল ছবিতে এক ধরনের চ্যালেঞ্জ থাকে, ঝুঁকিও থাকে। এ দেশে সিক্যুয়েল ছবির প্রচলন নেই। ছবিটা নিয়ে আপনি কী শঙ্কিত?
জয়া: না। আমি শঙ্কিত নই। গল্পের দিক দিয়ে এ ছবিটা আগেটার চেয়ে আরও শক্তিশালী। আমার মনে হয় দর্শকও এটি ভালোভাবে নেবেন।
বাংলানিউজ: ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ২’ ছবিতে আপনি তো সুপার মডেল?
জয়া : সুপার মডেল কথাটা কি ঠিক? তা জানি না। তবে এখানে মডেলিংয়ে আমি বেশ জনপ্রিয়। যাকে সারাদেশের মানুষ এক নামে চেনে। এখানে আমার চরিত্রের নাম মিতু। পেশায় মডেল বলা চলে। স্ট্রাগলার। সুন্দর একটা ফ্যামিলি লাইফ আছে তার। গল্পটা তো আসলে এক অর্থে প্রেমের গল্প। এই তো…। ছবিটা দেখতে হবে। আগাম বলতে চাই না।
বাংলানিউজ: ছবিতে আপনি প্রেমে পড়েন ক্রিকেটার শাকিব খানের। এই প্রেমে পড়ার প্রক্রিয়াটা কেমন? দুটো আলাদা জগত…
জয়া: ক্রিকেটারের প্রেমে পড়ার বিষয়টির কারণ জানতে হলে ছবি দেখতে হবে। সত্যি বলতে, এমন প্রেমের গল্প সাধারণত দেখা যায় না। সাধারণত এ ধরনের গল্প নিয়ে ছবি হয়নি এখানে। বেশ মৌলিক গল্প। রুম্মান রশীদ খানের লেখা এই গল্পে বেশ নতুনত্ব আছে। দুটি গ্ল্যামার পেশার দু’জনকে নিয়ে এমন প্রেমের গল্প দেখা যায় না। আসলে দিন শেষে দর্শক মৌলিক গল্পটাই খোঁজে। সে জায়গা থেকে দর্শক খুবই আনন্দ পাবেন ছবিটি দেখে।
বাংলানিউজ: ছবির ট্রেলার ও গান দেখে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান আপনাকে ফোন করেছিলেন?
জয়া: (প্রসঙ্গ এড়িয়ে) না না…আমরা ছবি নিয়ে কথা বলি। এখানে তো ছবি নিয়ে কথা হচ্ছে…
বাংলানিউজ: ছবির সহশিল্পীদের প্রসঙ্গে কিছু বলুন।
জয়া: ইমনের সঙ্গে প্রথম কাজ করেছি। মৌসুমী হামিদও আছে। শাকিব আছে, তার সঙ্গে আগেও কাজ করেছি। তার প্রসঙ্গে নতুন করে বলার কিছু নেই। সহশিল্পী হিসেবে খুবই চমৎকার। তবে ইমন ও মৌসুমীর অভিনয় খুবই ভালো লেগেছে। ডাবিংয়ে দেখেছি, ওরা খুব ভালো করেছে।
বাংলানিউজ: অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে কাজ করছেন- এটা কী সত্যি খবর?
জয়া: না না না। আমিও এ কথাটা প্রায়ই শুনি ইদানীং! এটা ঠিক নয়। আমার কাছে অন্তত এমন কোনো প্রস্তাব এখনও আসেনি।
বাংলানিউজ: ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ৩’-এ আপনি থাকছেন। এবারও নায়ক হিসেবে কী শাকিবকে পাওয়া যাবে?
জয়া: সিরিজের তৃতীয় ছবিটা যে হবে তা আজই (৪ এপ্রিল) জানতে পারলাম। পরিচালক জানালেন, আবারও হচ্ছে। এজন্য পরিচালক ও প্রযোজককে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আর নায়কের নিশ্চয়তা আমি দিতে পারছি না। পরিচালক বলেছেন, নায়কের বিষয়ে চমক আছে এবার। জানি না, আসলে চমকটা কী। আমিও অপেক্ষায় আছি চমকের জন্য।
বাংলানিউজ: এই ছবি আরও আগে মুক্তি পেলে ভালো হতো, এ নিয়ে কী বিরক্তি আছে?
জয়া: একটু বিরক্ত ছিলাম। আরও আগে মুক্তি পেলে ভালোই হতো। তখন ক্রিকেটের একটা বেশ হাওয়া চলছিলো। তবু অসুবিধা নেই, দেখা যাক। আমি ছবিটা নিয়ে আশাবাদী।
বাংলানিউজ: আপনি ও মাহি একই দিনে পর্দায় আসছেন। দর্শক বিভক্ত হয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন?
জয়া: না, একদমই না। অনেক ছবি একসঙ্গে আসুক, এটা ভালো। দর্শক একটা ছবি দেখে ভালো লাগলে অন্যটাও দেখবে। একা নিজের ছবিটা ভালো হলেই সেটা ভালো নয়। আমি এটা মনে করি না। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে ইন্ডাস্ট্রিকে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। এটা ইতিবাচকভাবেই দেখছি।
বাংলানিউজ: আপনার হাতে এখন অনেক ছবি…
জয়া: দেশে নূরুল আলম আতিকের ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ করছি। আকরাম খানের ‘খাঁচা’র কাজ শেষ করলাম। মাহমুদ দিদানের ‘বিউটি সার্কাস’ আরেকটু পরে হবে, ওদের অগোছালো ভাবটা কাটুক। কলকাতার দু’তিনটি কাজ হাতে নিয়েছি। এর মধ্যে অরিন্দম শীলের ‘ঈগলের চোখ’ আর একটা শর্ট ফিল্ম করছি। নামটা ঠিক হয়নি। সামনে মনোজ মিশিকানের ‘আমি জয় চ্যাটার্জি বলছি’র শুটিং হবে। তারপর করবো শিবপ্রসাদ মুখার্জির ‘কণ্ঠ’র কাজ।
বাংলানিউজ: কলকাতার চলচ্চিত্রে একটু বেশিই সময় দিচ্ছেন। ওখানে বসবাসও করছেন…
জয়া: না না, এটা কি ঠিক? বরং এখানেই আমার কাজের সংখ্যা বেশি। আমার নতুন ছবি হচ্ছে, ‘বিউটি সার্কাস’, ‘মেসিডোনা’, ‘খাঁচা’, ‘পুত্র’, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’। আর ওখানে এতো ছবি কই?
বাংলানিউজ: ওপারের মসলাদার চলচ্চিত্রে আপনাকে দেখা যেতে পারে?
জয়া: কলকাতায় আসলে বাণিজ্যিক ছবির ব্যাখ্যা বদলে গেছে। দুটি ফাইট, হিরো-হিরোইন, চারটা গান- এমনটা আর নেই সেখানে। এর মানে হচ্ছে, এখানে যেটা বাণিজ্যিক ওখানে সেটা নয়। ওখানে এখন সৃজিত মুখার্জি কিংবা কৌশিক গাঙ্গুলির ছবিগুলোই বাণিজ্যিক হিসেবে ট্রিট করা হয়। সেদিক দিয়ে ওখানকার বাণিজ্যিক ছবিতেই কাজ করছি।
বাংলানিউজ: আপনি এখন দুই বাংলার ছবিতে ব্যস্ত। এই জার্নিটা কেমন?
জয়া: আমি অভিনয় করি। এটাই আমার মূল কাজ। আমাকে যেখান থেকেই বলবে আমার কালচারের সঙ্গে, আমার ভ্যালুজের সঙ্গে যেটা যাবে, আমি সেটাই করবো। জার্নিটা অবশ্যই ভালো। ওখানে কাজ করতে গেলে একরকম আনন্দ হয়। তবে নিজের দেশের কাজের অানন্দ অন্যরকম।
বাংলানিউজ: বলিউডের ছবিতে আমাদের কালচার দেখানো হয় না। তাহলে ওখান থেকে প্রস্তাব পেলে কী করবেন?
জয়া: সেটা যদি কোনো পরিচালক মনে করেন আমি উপযুক্ত তাহলে অবশ্যই কাজ করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘন্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৬
এসও/জেএইচ