ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

খাগড়াছড়িকে পাহাড়ের সঙ্গে মেলালে ভুল হবে

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৬
খাগড়াছড়িকে পাহাড়ের সঙ্গে মেলালে ভুল হবে ছবি: শামীম হোসেন, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খাগড়াছড়ি থেকে: খাগড়াছড়িকে পাহাড়ি জেলা ভেবে কেউ যদি মনে মনে ছবি আঁকেন তাহলে ভুল করবেন। পরিপাটি গোছানো খাগড়াছড়ি শহরটি সমতলের আর দশটা শহরের মতোই।

যে কারণে খাগড়াছড়িকে পাহাড়ের একমাত্র সমতল শহর বলা হয়।

শহরটিতে প্যাডেল চালিত রিকশা ছুটে চলেছে হরদম। কিন্তু পাশের জেলা  রাঙ্গামাটি সদর পুরোই উল্টো। এখানে বাটি চালান দিয়েও কোনো প্যাডেল চালিত রিকশা পাওয়া যাবে না। যাবে কী করে, এখানে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশারই দমে কুলায় না! উঁচু-নিচু টিলায় ওঠা-নামা করতে গেলে যাত্রী নামিয়ে উঠতে হয়। কিছু কিছু এলাকায় তো যেতেই পারে না।
বান্দরবানের অবস্থাও অনেকটা রাঙ্গামাটির মতো। অল্প কিছু এলাকায় রিকশার দেখা মিলবে। আর বেশিরভাগ শহর টিলার ওপর।

কিন্তু খাগড়াছড়ি একেবারে সমতলের অন্যান্য শহরের মতোই বলা চলে।  চারিদিকে পাহাড়ে ঘেরা। ডিসি, এসপির অফিসসহ হাতে গোণা কয়েকটি অফিস রয়েছে পাহাড়ের পাদদেশে। আর পাহাড়ের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে পুরো শহর। প্রধান সড়ক কোর্ট রোড, শাপলা চত্বর, পৌরসভা, সরকারি মহিলা কলেজ, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বার্মিজ মার্কেট, দীঘিরপাড় রোড পুরোই সমতল।

আরো পড়ুন...ঝরনা নিজেই এসে মিশে গেলো শরীরে

 

শহরের যে কোনো প্রান্তে গেলেই দেখা মিলবে বিশাল বিশাল পাহাড় ঘিরে রেখেছে শহরটিকে। এখানকার সবচেয়ে সুন্দর সড়ক বলা হয় সরকারি মহিলা কলেজ সড়ককে। উত্তর-দক্ষিণে বহমান এই সড়ক থেকে পশ্চিমে এক কিলোমিটার দূরেই আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র। আলুটিলার গাঁ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে আরো বেশ কয়েকটি পাহাড়। এর মধ্যে কোনো কোনোটির উচ্চতা তিন হাজার ফুট।  

পাহাড় থেকে কলেজ রোড পর্যন্ত বিশাল সবুজের সমারোহ। হাতে গোনা কয়েকটি বাসতবাড়ি রয়েছে। আর পুরো দিগন্তজুড়ে ফসলী জমি।

এখানে সন্ধ্যার অনেক আগেই আলুটিলার আড়ালে হারিয়ে যায় সূর্য। যে কারণে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বেড়ে যায় ভ্রমণ পিপাসু ও কপোত-কপোতিদের আনাগোনা।

আবার আরেক শ্রেণির লোক রয়েছেন। যারা গাড়িতে চেপে আলুটিলার চুড়ায় পৌঁছে যাচ্ছেন; পুরো শহরটিকে অবলোকন করতে।
সমতলের মতো এই শহর অনেক ছিমছাম ও পরিচ্ছন্ন বলা চলে। রাস্তাঘাট অনেক পরিষ্কার। ছোট ছোট বিন ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। তাতেই ময়লা ফেলছেন লোকজন। সম্প্রতি রাজধানীর অনেক এলাকায় বিন বসানো হয়েছে। কিন্তু তাতে ময়লা ফেলার খুব একটা আগ্রহ দেখা যায় না। অনেক শহরে দেখা যায় দোকানিরা ঝাড়ু দিয়ে ময়লা ঠেলে দিচ্ছে সড়কের ওপর। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম খাগড়াছড়ির ব্যবসায়ীরা। তাদের দোকানের সামনে কোনো ময়লার ছড়াছড়ি নেই।

শহরটিতে চলাচলের জন্য হরদম মিলবে টমটম, অটোরিকশা ও পা চালিত রিকশা। টমটম রিজার্ভ নিলে খরচ একটু বেশি। তবে শেয়ারে গেলে মাত্র ১০ টাকায় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া যায়।

খাবারের দাম কমই বলা চলে। অনেক বাঙালি হোটেল রয়েছে যেখানে অনায়াসে খেয়ে নিতে পারবেন। বলতে গেলে বাঙালি হোটেলের আধিক্যই বেশি এই শহরে। অল্প সংখ্যক হোটেল রয়েছে ট্রেডিশনাল খাবারের।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৬
এসআই/এসআই 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।