ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

‘গাইবান্ধায় জামায়াত আর সংগঠিত হতে পারবে না’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
‘গাইবান্ধায় জামায়াত আর সংগঠিত হতে পারবে না’ ‘গাইবান্ধায় জামায়াত আর সংগঠিত হতে পারবে না’-ছবি: বাংলানিউজ

গাইবান্ধা থেকে: জামায়াতের ভাওতাবাজি মানুষ ধরে ফেলেছে। তাদের জনপ্রিয়তায় ধ্বস নেমেছে, তারা আর সংগঠিত হতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন গাইবান্ধার জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ আব্দুর রশীদ সরকার।

বাংলানিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে জামায়াত সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

রোববার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির গাইবান্ধা জেলা কার্যালয়ে এই সাক্ষাতকারটি নেয়া হয়।


 
তৃণমূল থেকে উঠে আসা গাইবান্ধার এই রাজনীতিবিদ দু’দফায় পৌরসভার কমিশনার ছিলেন। তারপর দু’দফায় গাইবান্ধা পৌরপিতা হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৯১ ও ’৯৬ সালে গাইবান্ধা সদর আসন থেকে জাতীয় পার্টির টিকেটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০১ সালে মাত্র ৭শ’ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে। এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোট থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে তার পক্ষে কাজ করেন। এরপর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। সেখানেও গাইবান্ধাবাসী তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেয়।

গাইবান্ধার অলিগলি তার চেনা, এই অঞ্চলের মানুষের নারী নক্ষত্রও তার জানা। যাকে যেভাবে পেরেছেন সহায়তা করেছেন। মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সাহায্য প্রার্থী কার লোক, সেটা বড় বিষয় নয়। এখনও সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ। তার যেন কিছুতেই না নেই। তাকে কেউ কখনও বিরক্ত হতে দেখেননি। মধ্যরাতে কেউ বাসায় গেছেন, তাকে খাইয়ে দিয়ে তবেই ছেড়েছেন। আর এই গুণটাই তাকে ভোটের মাঠে ফ্যাক্টর হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। ‘গাইবান্ধায় জামায়াত আর সংগঠিত হতে পারবে না’-ছবি: বাংলানিউজযখনই ভোটের জন্য জনতার দ্বারে গেছেন কখনই খালি হাতে ফিরতে হয়নি। আবার জনগণকেও তার দ্বারে গিয়ে শূণ্য হাতে ফিরতে হয়নি কখনই। জনগণ তাকে প্রাণ উজাড় করে দিয়ে ভালোবেসেছে।

কথা হয় গাইবান্ধার আগামী দিনের রাজনীতি নিয়ে। তিনি বলেন, এই অঞ্চলে কিছুদিন আগেও জামায়াতের পক্ষে এক শ্রেণির মানুষের ইতিবাচক মনোভাব ছিলো। এখন কিন্তু সেখানে ভাটার টান দেখা যাচ্ছে।

বিশেষ করে ২০১৪ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পলাশবাড়ি, সাদুল্যাপুর ও সুন্দরগঞ্জে যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে তার প্রভাব পড়েছে। মানুষ তাদের (জামায়াত) মন থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। তারা বারবার মানুষকে মিথ্যা কথা বলে, ধর্মের দোহাই দিয়ে ভোট নিয়েছে। জামায়াত যে ভাওতাবাজদের দল মানুষ ধরে ফেলেছে।

প্রশ্ন ছিলো জামায়াততো এখন চাপে, নির্বাচনের আগে ফের ঘুরে দাঁড়াতে পারে কি-না? জবাবে বলেন, এই অঞ্চলে তাদের আর সংগঠিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। তারা মানুষের বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, এটা শান্তিপ্রিয় গাইবান্ধাবাসী ভলোভাবে নেয়নি।

গাইবান্ধায় বিশেষ করে পলাশবাড়ি, সাদুল্যাপুর ও সুন্দরগঞ্জে তাদের একটি বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে বলে মনে করা হয়। তারা আগামী নির্বাচনের ফলাফলে কোনও প্রভাব ফেলবে কি না? জবাবে বলেন, তাদের কিছু রিজার্ভ ভোট ছিলো, তার মানে বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে এ কথা বিশ্বাস করি না। মূলত প্রার্থীর ইমেজ ও ব্যক্তি পরিচয় দ্বারা ভোটাররা প্রভাবিত হয়ে থাকেন। সেটাকে ভোট ব্যাংক বলা যাবে না। তবে এবার তাদের যে পরিমাণ বদনাম হয়েছে। আর ভালো করার সুযোগ নেই।

২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সদর আসন ছেড়ে দেয় জাতীয় পার্টি। এবার সে রকম সম্ভাবনা কতুটুকু? জবাবে বলেন, ২০০৮ সালের প্রেক্ষাপট আর এখনকার প্রেক্ষাপট এক নয়। এখন আওয়ামী লীগ তাদের স্বার্থেই জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট করবে। আর জাতীয় পার্টি রংপুরের ২২ আসনে (রংপুরের-পীরগঞ্জ ছাড়া) কোনও ছাড় দিবে না। এই শর্ত মানলে তবেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট হবে। না হলে হবে না।

জাতীয় পার্টি ছাড়া আওয়ামী লীগের জোট অপরিপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আর কোনটি দলের জনপ্রিয়তা, ইনুর জাসদের কি কোনও বেজড আছে! এগুলো দিয়ে ভোটের মাঠে ফাইট দিতে পারবে? এরশাদের জাতীয় পার্টি যেদিকে যাবে তারাই সরকার গঠন করবে বলেও মনে করেন রশীদ সরকার।
 
গাইবান্ধা সদরে আসনে প্রার্থী হতে চান। জাতীয় পার্টি তাকে মনোনয়ন না দিলে প্রয়োজনে স্বতন্ত্র হলেও নির্বাচন করবেন। দলীয় প্রতীক নয় তার ব্যক্তি জনপ্রিয়তাও এখানে ভোটের ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে কারণে অনেক বড় দলও তাকে টানার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
এসআই/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।