ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

একক প্রার্থীতে রাজশাহীর ৬ আসনেই নির্ভার বিএনপি!

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
একক প্রার্থীতে রাজশাহীর ৬ আসনেই নির্ভার বিএনপি! ব্যারিস্টার আমিনুল হক, মিজানুর রহমান মিনু, মোহাম্মদ শফিকুল হক মিলন, অধ্যাপক আবদুল গফুর, নাদিম মোস্তফা ও আবু সাঈদ চাঁদ

রাজশাহী থেকে: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর ৬টি আসনে  প্রার্থী মনোনয়নে খুব বেশি হিসাব-নিকাশের প্রয়োজন হবে না বিএনপির।

প্রত্যেকটি আসনেই একক প্রার্থী চূড়ান্ত হয়ে আছে। ফলে বিদ্রোহী প্রার্থীর ঝামেলাও পোহাতে হবে না।

এ ক্ষেত্রে তাই বেশ স্বস্তিতেই রয়েছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
 
রাজশাহীর বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থক এবং শীর্ষনেতারা এসব তথ্য জানিয়েছেন। আর সমর্থন করেছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং বিরোধী শিবিরসহ সাধারণ ভোটাররাও।
 
স্থানীয়রা বলছেন, টানা ১১ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আর কোনো এক্সপেরিমেন্ট চালাবে বলে মনে হয় না। অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত নেতাদেরকেই দলীয় মনোনয়ন দিয়ে জিতিয়ে আনার চেষ্টা করবে দলটি। বিগত দিনে রাজশাহীতে যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন অথবা মন্ত্রী- প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন- তাদের হাতেই ধানের শীষ প্রতীক তুলে দেওয়া হবে।

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক এবারও মনোনয়ন পাচ্ছেন! ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
 
কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ায় ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। তার আসনে তারই ছোট ভাই সাবেক পুলিশ প্রধান ইনামুল হক মনোনয়ন পান।
 
ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর কাছে পরাজিত হয়ে ‘রাজনীতি আমার জন্য নয়’ বলে মন্তব্য করেন ইনামুল হক। ঘোষণা দেন ভবিষ্যতে নির্বাচন না করারও।
 
বিএনপির নতুন কোনো নেতৃত্ব এখানে তৈরি হয়নি, জোট শরিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রার্থীও নেই। ফলে এ আসনটি ব্যারিস্টার আমিনুল হকের জন্য নির্ধারিত হয়েই আছে।
 
রাজশাহী বিএনপির অভিভাবক বলে পরিচিত মিজানুর রহমান মিনু বলেন, রাজশাহী-১ আসনে বরাবরই ব্যারিস্টার আমিনুল হক নির্বাচন করে আসছেন। ২০০৮ সালে মামলা-মোকদ্দমার কারণে করতে পারেননি। আগামী নির্বাচনে দলের প্রার্থী তিনিই হবেন।
 
রাজশাহী-২ (সদর) আসনটি মিজানুর রহমান মিনুর। স্থানীয়দের মতে, মিনু রাজশাহীর যে আসনে নির্বাচনের আগ্রহ প্রকাশ করবেন, সে আসনে আর কেউ বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন না।
 
ফলে রাজশাহী-২ আসনটি মিজানুর রহমান মিনুর জন্য স্থায়ীভাবে চূড়ান্ত হয়ে আছে। এ আসনেই ২০০১ সালের নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে পরাজিত করেছিলেন মিনু।
 
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বাংলানিউজকে বলেন, এ আসনে নির্বাচন করবেন ভাই (মিনু)। এখানে অন্য কেউ মনোনয়ন চাইবেন না।
 
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসন নিয়েও কোনো ঝামেলা নেই বিএনপির। মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শফিকুল হক মিলন এ আসনের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত হয়ে আছেন।
 
স্থানীয়রা জানান, মিজানুর রহমান মিনু সিটি করপোরেশন নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল আর শফিকুল হক মিলন- দু’জনই রাজশাহী সিটিতে মেয়র পদে প্রার্থিতার ঘোষণা দেন। তখন রাজশাহী-৩ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার শর্তে সরে দাঁড়ান মিলন।
 
শফিকুল হক মিলন বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ আসনে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে- এমন প্রতিশ্রুতিতে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলাম। আশা করি, আমার দল প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে’।
 
রাজশাহী-৪ (বাঘমারা) আসনে ধানের শীষ পাচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুহম্মদ আব্দুল গফুর। এ আসনেও বিএনপির কোনো বিদ্রোহী প্রার্থীর সম্ভাবনা নেই। তবে বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে জানা গেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রার্থী এনামুল হকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গফুরই বিএনপির প্রথম পছন্দ।  
 রাজশাহী-৫ (দুর্গাপুর-পুঠিয়া) আসনে বিএনপির একক প্রার্থী নাদিম মোস্তফা। কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক এ বিশেষ সম্পাদক মামলার কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। সেবার বিএনপির প্রার্থী হন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। মামলা-মোকদ্দমার ঝামেলা না থাকলে এবার নাদিম মোস্তফাই দলের হয়ে লড়বেন।  
 
রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনেও প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে তেমন কোনো ঝামেলায় পড়তে হবে না বিএনপিকে। চারঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চাঁদ জনপ্রিয়তায় সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সমান তালে লড়তে চাঁদই বিএনপির প্রথম পছন্দ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
এজেড/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।