ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

কাঁপানো শীতে প্রযুক্তির উত্তাপ

সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৪
কাঁপানো শীতে প্রযুক্তির উত্তাপ

দুনিয়া কাঁপানো প্রযুক্তি বিস্ময়ের খতিয়ানে কড়া নাড়ছে আরও একটি নতুন বছর। কত কিছুই যে হাতছানি দিচ্ছে তার কোনো ইয়াত্তা নেই।

ফলে ২০১৪ সালের শুরুতেই কপাল বদলাচ্ছে প্রযুক্তিপ্রেমীদের।

যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসের অনুষ্ঠিত সবশেষ কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক প্রদর্শনীতে তাই এসেছে নতুন ১০টি উদ্ভাবনী বার্তা। এ নিয়ে গবেষণা আর চুলচেরা বিশ্লেষণেও মেতে উঠেছেন প্রযুক্তিবিদেরা। বলছেন নতুন সমীকরণ আর অভূতপূর্ব সম্ভাবনার কথা।

(১) ওয়্যারেবল
শিশু পোশাক থেকে শুরু করে পায়ের মোজা এহেন কোনো স্থানে নেই যে অংশে প্রযুক্তিপণ্য পরিধান করা যাবে না। বলতে গেলে প্রযুক্তি পোশাকের বর্ণিল সমাহার এ বছরেই ভেলকি দেখাবে। এ ধারণায় এরই মধ্যে আলোচনায় দৃশ্যমান হয়েছে গুগল গ্ল্যাস, আইওয়্যার এবং হাতঘড়ির আদলে অ্যাপ নিয়ন্ত্রিত স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তিবন্ধু।

(২) দ্য ইন্টারনেট
অনঢ় ডেস্কটপ থেকে ল্যাপটপ, নোটবুক এবং স্মার্টফোন ছাড়িয়ে ইন্টারনেট এখন মানবজীবনের প্রতিটি পণ্যতেই তার সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করে চলেছে। টুথব্র্যাশ, বাস্কেটবল এমনকি টেনিস বল সব কিছুতেই সহযোগী অবজেক্ট হিসেবে ইন্টারনেট জুড়ে যাচ্ছে নিবিড় বন্ধুত্বে। একেই যেন বলে অসময়ের প্রকৃত বন্ধু।

(৩) টেলিভিশন
আচমকা চমকে এবার বছরজুড়ে তান্ডব চালাবে ইউএইচডি টেলিভিশন। ধারণা করা হচ্ছে গত পাঁচ বছরে টিভি প্রযুক্তিতে যে পরিবর্তন আসেনি এবারে শুধু এক বছরেই তা নতুন দৌঁড় দেখাবে। বড় আদলের টিভি এ বছর জনপ্রিয়তা ছড়াবে। সঙ্গে মিলবে আলট্রা এইচডি’র বর্ণিল জগত।

ইন্টার‌অ্যাকটিভ ফিচার এবং বাঁকানো পর্দার দৃশ্যপট বিনোদনপ্রেমীদের ডুবিয়ে দেবে অনন্য এক ভুবনে। এ ছাড়া বাড়তি সংযোগ হবে হাই-ডেভিনেশন কনটেন্টের রূপালী পর্দা।

(৪) অটোমোবাইল
এবারের ইলেকট্রনিক প্রদর্শনীতে হাজির হয় নয়টি অটোমোবাইল নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান। গাড়ি হবে পুরোপুরি প্রযুক্তিকেন্দ্রিক এমন সব ভাবনার ভবিষ্যৎ উপস্থিতি তুলে ধরা হয় এবারের আসরে। স্বনিয়ন্ত্রিত গাড়ির ধারণা আলোচনায় এলেও চালকহীন গাড়ি পার্কিং প্রযুক্তিই এসেছে মূল আলোচনায়। বিখ্যাত জেনারেল মটরস ফোরজি সংযুক্ত কয়েকটি গাড়ি দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরে।

(৫) স্মার্টফোন
জীবনের ব্যক্তিগত প্রতিটি সময়ের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী এখন স্মার্টফোন। ঘুম থেকে ওঠে ঘুমানোর আগ অবধি স্মার্টফোন ছাড়া একটি মুহূর্তও কল্পনা করা কঠিন। এ ছাড়া জীবনের নিত্যকাজের প্রয়োজনানুসারে তৈরি হচ্ছে শক্তিশালী আর কার্যকরী সব স্মার্টফোন অ্যাপ।

ফ্যাবলেট আদলের পণ্যগুলোতে অ্যাপ যুক্ত হয়ে এ বছর মানুষের জীবনের আচরণ পদ্ধতিই বদলে দেবে স্মার্টফোন আর বর্ণিল অ্যাপ।

(৬) রোবোটিকস
বিনোদন, খেলাধূলা, নিরাপত্তা এমনকি ঘরোয়া কাজেও রোবোটিকস টেকনোলজি নিজের জায়গা তৈরি করে নিচ্ছে। যান্ত্রিক হলেও বন্ধুর মতো পাশে থেকে সব ধরনের সহায়তা করতে পারদর্শী আর নির্ভরযোগ্য রোবট তৈরি হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। শিশুদের জন্য সহায়ক রোবটও প্রস্তুত হয়ে গেছে।

তা ছাড়া স্মার্টফোন দিয়ে ঘরের রোবটকে পুরোপরি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এ বছর এ ধরনের বাণিজ্যিক রোবট বিক্রি হবে। এমন তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

(৭) ড্রোনস
রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বলয় পেরিয়ে এবারে ব্যক্তিগত সুরক্ষায় খুদে ড্রোন প্রদর্শিত হয়েছে সিইএস-২০১৪ আসরে। খেলনা আদলের হেলিকপ্টার কিংবা রোবো ব্যক্তি ড্রোন হিসেবে ব্যক্তির নিরাপত্তায় রক্ষাকবচ হয়ে উঠবে। এ বছর খেলনা অবয়বের ‘পার্সোনাল ড্রোন’ বিক্রি পরিকল্পনা আছে বলে প্রর্দশনী সূত্রে জানা গেছে।

(৮) থ্রিডি প্রিন্টিং
এবারের সিইএস আসরে সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে থ্রিডি প্রিন্টিং টেকনোলজি। সিঙ্গাপুরের পাইরেট থ্রিডি বুককেনার এ ধরনের ঘরোয়া প্রিন্টার বিক্রি করেছে। দাম বলা হয়েছে ৪৯৭ ডলার। কম্পিউটার কিংবা স্মার্টফোন থেকে সরাসরি প্রিন্ট দিলেই থ্রিডি আদলের অভুতপূর্ব অর্থাৎ একেবারেই পণ্যের আদলে প্রিন্ট হয়ে আসবে। এটি সচোখে না দেখলে বিশ্বাস করাই কঠিন হবে।

(৯) স্মার্টহোমস
না স্মার্টফোন নয়, এসেছে স্মার্টহোমসের সময়। ঘরোয়া পণ্যকে প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রণে এনেছে এলজি এবং স্যামসাং। এখন টেক্সট মেসেজ দিয়েই রান্নাঘরের চুলা, ওয়াশিং মেশিন, ফ্রিজ কিংবা ওভেনকে কাজের শর্ত জুড়ে দিতে স্মার্টহোমস পণ্য এখন দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে প্রযুক্তিশৈলীর আদলে বেঁধেছে প্রযুক্তি বিশ্বের খ্যাতনামা ব্র্যান্ডগুলো। এ ছাড়া ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রিত দরজা এবং বাড়ির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাব্যবস্থায় এ প্রযুক্তির বাণিজ্যিক সূচনার বছর হবে ২০১৪।

(১০) ইনটুইটিভ কম্পিউটিং
বাণিজ্যিক কাজের কর্মীরা এখন মাউস আর টাচপ্যাড থেকে রেহাই পেতে চাইছেন। অত্যাধুনিক আদলের কম্পিউটার আর গেমিং হার্ডওয়্যারে স্বজ্ঞানের বিদ্যা এখন সময়ের দাবি। আর তাতে সাড়াও মিলেছে দ্রুতই।

শুধু সফটওয়্যার বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে ভয়েস এমনকি চোখের ইশারায় চটজলদি যেকোনো জটিল কাজের সমাধান মিলতে পারে। এ প্রযুক্তিবিদ্যায় নির্দিষ্ট আইকনে হাতের স্পর্শ আর টাচস্ক্রিনের আদলেই ‘ইনটুইটিভ’ কম্পিউটার তার দক্ষতার প্রমাণে নির্ভরতা আদায় করে নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।