ঢাকা: দেশের সব ইউনিয়ন পরিষদে ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠার চার বছর উপলক্ষে ১১ নভেম্বর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আয়োজন করা হয়েছে ‘ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তা সম্মেলন-২০১৪’।
প্রযুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করতেই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।
রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
সম্মেলনের বিভিন্ন দিক নিয়ে তথ্য তুলে ধরেন- এটুআই (একসেস টু ইনফরমেশন) প্রোগ্রাম প্রকল্পের পরিচালক কবির বিন আনোয়ার ও নাইমুর রহমান মুক্তা।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সব ধরনের সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতেই কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার আধুনিক রূপ। বিশ্বের বহু দেশ চেষ্টা করেছে এ ধরনের প্রযুক্তিনির্ভর সেবা পৌঁছে দিতে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল মানুষের প্রয়োজন থেকেই কাজ শুরু করেছেন; যে কারণে এই সফলতা।
তিনি বলেন, ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র এখন মানুষের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে একমুখী বাণিজ্য, একমুখী কৃষি দিয়ে মধ্যআয়ের দেশে পরিণত হওয়া সম্ভব নয়। এজন্য বাণিজ্যের বৈচিত্র্য দরকার। আমাদের নীতিমালা প্রশংসিত হয়েছে। ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি পুরস্কার ও ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিস অ্যালায়েন্স পুরস্কার দুটি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন দায়িত্ব নেন, তখন দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল ১০/১২ লাখ। আজ তা চার কোটি ছাড়িয়ে গেছে। একেকটি ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র ডিজিটাল সেন্টারে পরিণত হয়েছে। এখন সরকারি অফিস পেপারলেস অফিস করা, ইলেকট্রনিক ল্যান্ড রেকর্ড সিস্টেম করতে কাজ করছে এটুআই।
তিনি বলেন, এ মাসের মধ্যে সরকারি কাজে ডিজিটাল সাইন ব্যবহার করা হবে। ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী বছরের মধ্যে ফ্রি ওয়াইফাই দেওয়া হবে।
এটুআই প্রোগ্রাম প্রকল্পের পরিচালক কবির বিন আনোয়ার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় ডিজিটাল সেন্টারগুলো অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছে।
ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের প্রশংসা করে প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের কাজের স্বীকৃতি প্রদান, দেশবাসীকে তাদের সামর্থ্য আরেকবার মনে করিয়ে দেওয়া এবং ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি পুরস্কার ও ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিস অ্যালায়েন্স পুরস্কার উদযাপনের জন্যই এই আয়োজন।
তিনি বলেন, উদ্যোক্তাদের একটি স্বীকৃতি দেওয়াই এই আয়োজনের লক্ষ্য। আমাদের প্রকল্পে প্রায় অর্ধেকই নারী। ইউনিয়ন-পৌরসভা থেকে সব পর্যায়ে প্রশিক্ষিত জনবল তৈরিতে কাজ করেছি। ৫০ লাখ মানুষকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়েছি।
বর্তমানে দেশের সব ইউনিয়নে (৪৫৪৭), সব পৌরসভায় (৩২১) এবং ১১টি সিটি কর্পোরেশনের সব ওয়ার্ডে স্থাপিত ডিজিটাল সেন্টারগুলো গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষের জন্য সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক তথ্য ও সেবাপ্রাপ্তির এক অনন্য কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এসব তথ্য ও সেবাকেন্দ্র থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১২ কোটি সেবা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ কোটি অনলাইন জন্ম নিবন্ধন।
আর এসব সেবা প্রদান করে উদ্যোক্তারা এ পর্যন্ত ১৪০ কোটি টাকার বেশি উপার্জন করেছেন। মালয়েশিয়া ও অন্যান্য দেশে যেতে ইচ্ছুক ২০ লাখ শ্রমিক ও পেশাজীবীদের অনলাইন নিবন্ধন এবং বাড়িতে বসে জমির পর্চা পাওয়া, ডিজিটাল সেন্টার থেকে সেবা প্রদানের অনন্য নজির। এছাড়া গ্রামে বসেই মোবাইল ব্যাংকিং, জীবন বীমা, পল্লী বিদ্যুতের বিল পরিশোধ, সরকারি ফরম, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল, অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, অনলাইনে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ বহুবিধ (৬০ ধরনের) সেবা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে, জনগণের খরচের পাশাপাশি সময়ও বেঁচে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৪