ঢাকা: ইমেইলে, ফেসবুকে বা অন্য কোনো উপায়ে কেউ কাউকে হুমকি দিলে বা অশ্লিল কিছু প্রচার করে সাইবার ক্রাইম করে থাকলে তাকে শনাক্ত করতে অফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স সফটওয়্যার তৈরি করেছে কার্ডিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী অমি আশরাফ। সাইবার অপরাধকারী কোনোভাবে এটির লিঙ্ক ডাউনলোড করতে থাকলে এটি অটোমেটিকভাবে প্রতি ৫ সেকেন্ড পরপর ওই পিসির ২ বার স্ক্রিন ইমেজ পাঠানো শুরু করে।
আশরাফ জানায়, পর্নোগ্রাফি, ইমেইলে হুমকি বা ফেক ফেসবুক আইডি শনাক্তকরণে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। এছাড়াও অমি আশরাফ আরো ডেভেলপ করেছে সম্পূর্ণ নতুন একটি ওয়েব ব্রাউজার যার নাম দিয়েছে ‘লাইটিং দ্য ওয়েব ব্রাউজার’। ভিজ্যুয়াল স্টুডিং ২০১৩ দিয়ে তৈরি এই ব্রাউজারে চলমান অন্য ব্রাউজারের চেয়ে ভালো অপশন রয়েছে। এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ডাউনলোড ম্যানেজারের (আইডিএম) মতো যে কোনো এপ্লিকেশন মুহূর্তেই ডাউনলোড করা যাবে। প্রক্সি সার্ভার চেঞ্চ করে যে কোনো লোকেশন বের করা যাবে। এতে রয়েছে কালার চেঞ্জ থিমও।
কার্র্ডিফের পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদাত পারভেজ, ফারাবি আকন্দ, চৌধুরী সাকিব শাহরিয়ার দেখাচ্ছে কীভাবে ড্রাইভার বা চালক ছাড়াই গাড়ি চালানো যায়। তাদের এ প্রজেক্টটির নাম ‘গুগল ড্রাইভারলেস কার’। গুগলের সাহায্যেই সেন্সর বা জিপিএস ব্যবহার করে এর মাধ্যমে কোনো চালক ছাড়াই গাড়ি ড্রাইভ করা যাবে।
শুধু তাই নয়, আইসিটিকে ব্যবহার করে পুরো বাংলাদেশকে কীভাবে বদলে দেওয়া যায়, এ ধরনের প্রজেক্ট তৈরি করেছে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী এএফএম ফাইয়াজ রহমান, আব্দুল্লাহ ওমর নাসিফ, আহমেদ জুবায়ের আস সাকিব। তাদের প্রকল্পের নাম ‘ড্রিম বাংলাদেশ’। ড্রোন ব্যবহার করে কীভাবে অল্প সময়ে ঝুকিপূর্ণ কাজ করা যায় প্রদর্শনীতে তা দেখিয়েছে ইউনাইটেড ইউনিভার্সির শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতি (১৩ নভেম্বর) ও শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) ধানমন্ডিতে জমে ওঠা কার্ডিফ ইন্টার স্কুল আইসিটি ফেয়ারে খুদে প্রযুক্তি প্রেমিরা তাদের উদ্ভাবন তুলে ধরেছে।
এতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, শিক্ষা, বিনোদন বিষয়ক নানা প্রজেক্ট প্রদর্শিত হয়েছে। ছিল গেমিং কম্পিটিশন, রোবট ও ড্রোন প্রদর্শনী, লোগো প্রোগ্রামিং কনটেস্ট, এসএমএস কনটেস্ট, ব্রেইন টিজার, ডিজিটাল আর্ট কম্পিটিশন প্রভৃতি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ডেফোডিল গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান, দীর্ঘ সময় নিয়ে এই ক্ষুদে প্রযুক্তিবিদদের নানা আবিষ্কার ঘুরে ঘুরে দেখেন। তথ্যমন্ত্রী তাদের ভবিষ্যতের অভিভাবক হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা অর্জনে ভূমিকা রাখার আহবান জানান। শুক্রবার ছিল শেষ দিন।
এদিন ডিজিটাল আর্ট ও ভিজ্যয়াল আর্ট কম্পিটিশন হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানের পর নৃত্য, ফ্যাশন শো, গান ইত্যাদির সমন্বয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মেলার পরিসমাপ্তি হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সাবেক সভাপতি মোস্তাফা জব্বার।
কার্ডিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার প্রিন্সিপাল হেড অব স্কুল জিএম নিজাম উদ্দিন জানালেন, ভবিষ্যতমুখী প্রজন্মের মধ্যে আইসিটির চেতনা ছড়িয়ে দিতেই এই মেলার আয়োজন। আগামীতে আরো ব্যাপক আয়োজনে আইসিটি ফেয়ার অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে বৃহৎ পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে বিজ্ঞান মেলা।
বাংলাদেশ সময় : ১৫১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৪