ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

তরুণদের মন্ত্রণালয়ে ইন্টার্নশিপ করাবে সরকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৪
তরুণদের মন্ত্রণালয়ে ইন্টার্নশিপ করাবে সরকার ছবি: কাশেম হারুন/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: তরুণদের দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ইন্টার্নশিপ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয়।

তিনি বলেন, ‘তরুণদের দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করতে সরকার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ইর্ন্টানশিপ শুরু করবো।

আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অলরেডি শুরু হয়ে গেছে। আইসিটি মন্ত্রণালয় ওয়াদা করেছে তারা ৫০ জন ইন্টার্নকে নিয়োগ করবে। এনার্জি মিনিস্ট্রি ওয়াদা করেছে তারা ৫০০ জন ইন্টার্নকে
নিয়োগ করবে। ’

শনিবার রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিসনের গ্র্যান্ড বল রুমে ‘ইয়ংবাংলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের স্বপ্ন নিয়ে গঠিত হয় তারুণ্যের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর ‘ইয়াং বাংলা’। এটি তরুণদের জন্য একটি জাতীয় প্লাটফর্ম। বাংলাদেশের সর্বস্তরের যুবকদের সমন্বিত করে জাতীয় উন্নয়ন প্রক্রিয়া তথা রূপকল্প  ২০২১ বাস্তবায়নের কাজে অর্ন্তভুক্ত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ইয়ংবাংলা’।

সারাদেশের তরুণ নেতৃত্বকে একই প্লাটফর্মে আনার জন্য কাজ করবে ইয়ংবাংলা। যার সঙ্গে ৬৪ জেলা থেকে ২০০টিরও বেশি সংগঠন এরইমধ্যে ইয়ংবাংলার সঙ্গে সহযোগী হিসেবে যোগ দিয়েছে।

তরুণ ও নবীন উদ্যোক্তাদের সামর্থ্য বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষিত করা, প্রতিষ্ঠিতদের সঙ্গে নবীদের যোগাযোগ স্থাপন করিয়ে দিবে ‘ইয়ংবাংলা’।

উদ্বোধনের পর সজীব ওয়াজেদ জয় ইয়ংবাংলার ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেন। ‘ইয়ংবাংলা’র ওয়েব অ্যাড্রেস www.youngbagla.org

সেন্টার ফর রির্সাচ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) উদ্যোগে তরুণদের জন্য এ প্লাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে।

উদ্বোধনী বক্তব্যে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আমরা শুধু কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দিতে চাই না। আমরা চাই আমাদের তরুণরা নিজের পায়ে দাঁড়াক। তারা নিজের উদ্যোগে কিছু করুক। তরুণরাই আগামীর ভবিষ্য। ’

আওয়ামী লীগ সরকার শুধু বর্তমানের উন্নয়ন নয়, ভবিষ্যতের বাংলাদেশ এর উন্নয়নও নিশ্চিত করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের যুবকদের এগিয়ে আনতে হবে। সে জন্য আমরা সরকারের পক্ষ থেকে নানা রকম পদক্ষেপ নিয়েছি। ’

‘আমরা দেশের অর্থনীতির ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। শুধু আগামী ৫ বছর নয়, ২০২১ সাল, ২০৪১ সাল পর‌্যন্ত অর্থনীতির অগ্রগতি ধরে রাখতে হবে। তাহলে আজকাল
যারা সিনিয়র আছেন তখন তারা তো বেঁচে থাকবে না। তখন এই তরুণদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। ’ - যোগ করেন জয়।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশের ওপর জোর দিয়ে জয় বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে। উন্নত দেশগুলোর মেইন ইকোনমির চালক প্রাইভেট কোম্পানি।

এক্ষেত্রে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন।

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে জয় বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এসএমই লোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে যুবকরা নিজেরাই কাজের সৃষ্টি করতে পারে। যুবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। গত ৫ বছরের আমরা ২৭০ কোটি টাকা ক্ষুদ্র ঋণ দিয়েছি। ’

‘ইয়ংবাংলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মতবিনিময় সেশন হয়। দেড় ঘণ্টার মতো এ সেশনে অংশগ্রহণকারী ও প্যানেল আলোচকরা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। এ পর্বে সজীব ওয়াজেদ জয় বিভিন্ন বিষয়ে তরুণদের প্রশ্নের জবাব দেন।

এ পর্বে সজীব ওয়াজেদ মাদক নিয়ন্ত্রণের সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ‘মাদক একটা বিরাট সমস্যা। এটা আমাদের দেশে বাড়ছে। বিশেষ করে এটা তরুণদের ক্ষতি করছে সবচেয়ে বেশি। সমস্যাটি আসলে দেশের বাইরে থেকে আসে। কারণ আমাদের দক্ষিণ এশিয়ায় মাদকের একটা ট্রায়াঙ্গেল আছে। ’

তিনি বলেন, ‘স্মাগলিং থামানোর জন্য আমাদের সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। এই মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এই মাদক ব্যবহারের কোন কারণ নেই। যারা মাদক আসক্ত হয়ে গেছে তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। ’

দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্সের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু এ দুর্নীতি, সন্ত্রাস সহ্য করি না। গত ৫ বছরে প্রায় সাড়ে ৬০০ জনকে জেলে দিয়েছে। এগুলো আমরা জানি না। এগুলো মিডিয়া প্রচার করে না। ’

তিনি বলেন, ‘সমস্যা হলো একটি দল যখন ক্ষমতায় থাকে তখন যারা দুর্নীতি, সন্ত্রাস করে তারা কিন্তু সেই দলের  সদস্য হয়ে যায়। সুবিধাবাদী। যারা ছাত্রলীগের নাম নিয়ে সন্ত্রাস করছে তারা কি আসলে ছাত্রলীগার। আওয়ামী লীগ ৬ বছর ক্ষমতায়। ৪ বছর আগে যে ছাত্রলীগের যোগ দিয়েছে সেও এখন ছাত্রলীগ। ’

‘সে যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগে যোগ দিয়েছে সুবিধা নেওয়ার জন্য, চাঁদাবাজি করার জন্য। এটা কিন্তু আমরা বুঝতে পারছি। ’ – যোগ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

মিডিয়ার সমালোচনা করে জয় বলেন, ‘গরম গরম নিউজ না হলে মিডিয়া চলে না। সেনসেশনাল নিউজ চায় তারা। ছাত্রলীগ যেসব ভালো কাজ করছে সেগুলো তুলে ধরা হচ্ছে না। তাদের ভালো কাজগুলো খবরে আসে না। ’

জয় শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০০০ কোটি টাকার ফান্ড আছে। শিক্ষার জন্য। এটা প্রতিবছর বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতি বছর আমরা বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে খাবার দিচ্ছি। তাদের পরিবারকে সরাসরি টাকা দিচ্ছি তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে রাখার জন্য। আমরা কোটি কোটি টাকা দিচ্ছি।

জয় মাদ্রাসার শিক্ষার আধুনিকায়নের কথাও তুলে ধরেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের কোন সীমাবদ্ধতা নেই মন্তব্য করে জয় বলেন, ‘এমন কোন সমস্যা নেই যেটা আমরা সমাধান করতে পারি না। আমরাই পারি, আমরাই পারবো। আমরাই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। ’

তিনি বলেন, ‘৫ বছর আগে সবাই বলেছিলো ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন অসম্ভব। আজকে আপনারা সবাই বলেছেন এটা সম্ভব। কারণ ৫ বছরে যে পরিমাণ এগিয়ে এসেছি। অর্ধেক পথ এগিয়ে এসেছি। আমি মনে করি আমাদের দেশের মানুষ অত্যন্ত মেধাবী। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আমরা হয়তো অনেক দেশ থেকে পিছিয়ে আছি। কিন্তু মেধার দিকে থেকে আমরা পিছিয়ে নেই। ’

ইয়ং বাংলা প্রসঙ্গে নাহিম রাজ্জাক বলেন, এটি একটি উন্মুক্ত প্লাটফর্ম। যারা বাংলাদেশকে নিয়ে চিন্তা করে তাদের একই প্লাটফর্ম নিয়ে এসে দেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত করতে, রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে তরুণদের জন্য জাতীয় প্লাটফর্ম এই ‘ইয়ং বাংলা’।

তিনি বলেন, আমাদের অর্জনগুলো ধরে রাখতে চাই এবং সেই অর্জনগুলোকে পাশে রেখে আরো সামনে এগিয়ে যেতে চাই।

সেন্টার ফর রির্সাচ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) নির্বাহী পরিচালক সাব্বির বিন শামস বলেন, ‘ইয়ংবাংলা’ প্লাটফর্ম হচ্ছে তরুণদের জাতীয় উন্নয়নে সম্পৃক্ত করার জন্য।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে আগত বিভিন্ন সংগঠনের তরুণ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

** উদ্যোক্তা তরুণরাই গড়বে ভবিষ্যত বাংলাদেশ
**‘ইয়ং বাংলা’র যাত্রা শুরু

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।