ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

সমস্যার বেড়াজালে টেলিটকের থ্রি জি

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৪
সমস্যার বেড়াজালে টেলিটকের থ্রি জি

ঢাকা: শেষ সময়ে এসে সমস্যার বেড়াজালে পড়েছে টেলিটকের ‘থ্রি জি প্রযুক্তি চালুকরণ ও ২.৫জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ’ প্রকল্প। প্রকল্পে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না; অপরদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়ন করতে চেয়েও শেষ সময়ে এসে সরে গেছে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী দেশ চীন।

 
 
এতে করে যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে কিনা বা প্রকল্পের আওতায় কবে নাগাদ বিদ্যু‍ৎ সংযোগ পাওয়া যাবে তা জানেন না সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সভাকক্ষে প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির চতুর্থ সভার আয়োজন করা হয়। সমস্যা দূর করে যাতে প্রকল্পটির বিষয়ে একটা সুরাহা করা যায় সেজন্যই এই সভা।
 
২০১১ সালের মে মাসে একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছিল। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও প্রকল্পের নানা কাজ বাকি রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ২ হাজার ১শ সাইটে মোট ২ হাজার ১শটি নতুন বিটিএস ও ১ হাজার ৫৬২টি নোড বি বসানোর পরিকল্পনা ছিল।

এই ২ হাজার ১শটি সাইটের মধ্যে প্রায় ৮শ ৭৭টি আরইবি সাইটে অন্তর্ভূক্ত। এবং প্রতিটি সাইটে তিন কিলোওয়াট সংযোগের জন্য আবেদন সত্ত্বেও মাত্র্ ৬শ ৪০টি সাইটে আরইবি সংযোগ পাওয়া গেছে। বাকি ২৩৭টি সাইটে আবেদন অনুযায়ী সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না।

এছাড়া সাইটসমূহে যন্ত্রপাতি বসানোর সব কাজ শেষ হয়নি। ফলে প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে টেলিটক।

স্টিয়ারিং কমিটির সভাসূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রকল্প সংশোধন করা হবে। বাস্তব অবস্থার নিরিখে প্রকল্পের অনুমোদিত ব্যয়ের মধ্যে থেকেই প্রকল্পের কাজের পরিধি বাড়ানো হয়েছে।

এছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। যথাসময়ে সকল সাইটে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকেনি। এজন্য প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শেষ করাও সম্ভব নয়। সেজন্য সভায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্প প্রসঙ্গে  ইআরডি’র প্রতিনিধি বলেন, প্রকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সিএমইসি একই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। তাই ঠিকাদার ভালোভাবে কাজ করছে কিনা তদারকি করতে হবে।

ইআরডি আরো জানায়, দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের জন্য চীনা কর্তৃপক্ষের সহায়তা চাওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি চীনা কর্তৃপক্ষ ৫০ কোটি (৫০০ মিলিয়ন) মার্কিন ডলারের নিচের কোনো প্রকল্পে অর্থায়ন করবে না মর্মে জানিয়েছে। এ প্রকল্পে মাত্র ৭ কোটি (৭০ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার সহায়তা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু চীন কোনো সাহায্য করবে না বলে জানিয়ে দেওয়ায় এ-প্রকল্পে চীনা সহায়তা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

প্রকল্প পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আরইবি’র বিদ্যুতের অভাবে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। সেই কারণে আমরা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ’
 
‘কবে নাগাদ আরইবি বিদ্যুৎ-সংযোগ দেবে’-প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
 
প্রকল্পের অর্থায়ন থেকে চীনের সরে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক বলেন, টেলিটকের নেওয়া এ-প্রকল্পটিতে চীন অর্থ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে চীন এখন জানিয়ে দিয়েছে তারা কোনো অর্থ  দেবে না। আমার মনে হয়, সরকার প্রকল্পের অর্থের বিষয়ে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।