ঢাকা: সিএনজি গ্যাস কিংবা ডিজেল, পেট্রল দিয়ে গাড়ি চালানোর কথা সবারই নিশ্চয়ই জানা। কিন্তু মানুষের মল গাড়ির জ্বালানি! কি, একটু ঘাবড়ে গেলেন!
কথা কিন্তু সত্যি! ব্রিটেনের রাস্তায় এমনই গাড়ি নেমেছে।
দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উচ্ছিষ্ট খাবার ও পয়ঃনিষ্কাশনের ময়লা-আবর্জনা প্রক্রিয়াজাত করে প্ল্যান্টে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করা হয়েছে।
আর এ মিথেন গ্যাসকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করেই প্রথমবারের মতো রাস্তায় নেমেছে ‘বায়ো বাস’।
খবরে বলা হয়, প্ল্যান্টে গ্যাসের একটি ট্যাংক আছে, যা পাঁচ ব্যক্তির বার্ষিক বর্জ্য দিয়ে উৎপাদন করা হয়। এই জ্বালানি দিয়ে একটি গাড়ি ১৯০ মাইল (৩০৫ কিলোমিটার) পর্যন্ত যেতে পারে।
কর্মকর্তারা বলছেন, যুগান্তকারী গাড়ি ‘বায়ো বাস’ চলাচলে পরিবেশে বহমান বাতাসের গুণাগুণ বাড়াবে। পরিবেশ দূষণও কমে যাবে।
‘বায়ো বাসে’র প্রথম যাত্রার প্রথম যাত্রী, তিনি বায়ো বাসে চড়ে ২০ মাইল (৩২ কিলোমিটার) দূরত্বের ব্রিস্টল বিমানবন্দর থেকে সমারসেটের বাথে এসেছেন।
তিনি বলেন, জিন ইকো পরিচালিত ওয়েসেক্স পানি পয়ঃনিষ্কাশন প্ল্যান্টের উৎপাদিত গ্যাসে গাড়িটি চলছে।
জিন ইকো’র পরিচালক মোহাম্মদ সিদ্দীক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন নগরীতে বাতাসের গুণাগুণ উন্নয়নে বর্জ্যগ্যাস চালিত যানবাহনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বায়ো বাস স্থানীয় জনগণের বর্জ্য দিয়েই চালিত হয়। যা কোনো রাখঢাক না করেই পরিবেশ উন্নয়নে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তিনি বলেন, একটি ডিজেল ইঞ্জিনের চেয়ে মানুষের বার্ষিক বর্জ্য কম দূষণ উৎপাদন করে। অন্যদিকে একটি ডিজেল ইঞ্জিন কার্বন উৎপাদনের পাশাপাশি বেশ ক্ষতিকর বর্জ্য নির্গমন করে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
পরিবেশবান্ধব সংগঠন অ্যানারোবিক ডেস্টিনেশন অ্যান্ড বায়ো রিসোর্সেস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী শালর্ট মরটন বলেন, এই বাস পরিষ্কারভাবে আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, মানুষের মল ও খাদ্যের বর্জ্য কতটুকু মূল্যবান সম্পদ।
তিনি বলেন, মানুষের ব্যবহার অনুপযুক্ত খাদ্য আলাদাভাবে সংগ্রহ করে এবং তা নষ্ট না করে দাহনন্ত্রের মাধ্যমে সবুজ গ্যাস ও সবুজ সার তৈরি করে পুনরায় মানুষের ব্যবহার উপযোগী করা উচিত।
এ পরিবেশবিদ বলেন, ‘জিন ইকো’ এ সপ্তাহে প্রথমবারের মতো ৮ হাজার ৩০০ বাড়িতে মানুষের মল থেকে উৎপাদিত গ্যাস সরবরাহ করেছে। যা জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়ে বিশেষ অবদান রাখছে।
যুক্তরাজ্যের অভনমাউথ ও ব্রিস্টলে ৭৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটার পয়ঃনিষ্কাশন বর্জ্য এবং ৩৫ হাজার টন খাদ্য বর্জ্য থেকে প্রতি বছর এভাবে গ্যাস উৎপাদন করা হচ্ছে।
অক্সিজেনবিহীন জারন প্রক্রিয়ায় এসব পদার্থ ভেঙে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে প্রতি বছর ১৭ মিলিয়ন বায়োমিথেন গ্যাস উৎপাদন করা সম্ভব।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৪