ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ জুন ২০২৪, ২০ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

অস্ত্রোপচারের সময় নবজাতকের পেট কেটে ফেললেন চিকিৎসক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৪
অস্ত্রোপচারের সময় নবজাতকের পেট কেটে ফেললেন চিকিৎসক

ফরিদপুর: ফরিদপুরের সৌদি বাংলা নামক একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন (অস্ত্রোপচার) করার সময় নবজাতকের পেট কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। শিশুটিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তার অবস্থা আশংকাজনক।

জানা যায়, শহরের চর কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা নায়েব আলীর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুরশিদা বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে শনিবার (২২ জুন) বিকেলে বেসরকারি হাসপাতাল সৌদি বাংলায় ভর্তি করেন স্বজনরা। সেখানকার গাইনি চিকিৎসক ডা. শিরীন আক্তারের সিজারিয়ান অপারেশনে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন মুরশিদা বেগম।

নবজাতককে তুলে দেওয়া হয় বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের হাতে। কিছু সময় পর তারা দেখতে পান নবজাতকের নাভীর পাশ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে তারা প্রথমে কোনো গুরুত্ব দেয়নি। পরে রক্ত বেশি বের হলে ওই চিকিৎসককে খবর দেওয়া হয়।  তিনি এসে নাভীর পাশে কেটে ফেলা অংশে দুইটি সেলাই করে দেন।

এরপর ওই শিশুটিকে রাতেই ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে রোববার (২৩ জুন) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে ওই নবজাতক হাসপাতালটির শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

নবজাতকের পিতা নায়েব আলী বলেন, আমার হাতে আমার সন্তানকে তুলে দেয়। কিছু সময় পর দেখতে পাই নাভীর পাশ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। নাভীর পাশে বেশ খানিকটা কাটা। শরীর নীল হয়ে যাচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে তারা প্রথমে কোনো গুরুত্ব দেয়নি। পরে রক্ত বেশি বের হলে ওই চিকিৎসককে খবর দেওয়া হয়। তিনি এসে নাভীর পাশে কেটে ফেলা অংশে দুইটি সেলাই করে দেন।

তিনি আরও বলেন, রাতেই শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাই, সেখানকার চিকিৎসকরা ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। আমার আর্থিক অবস্থা ভালো না। তাই ঢাকায় না নিয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছি। আমার প্রথম সন্তান, কোনোভাবেই এটা মেনে নিতে পারছি না।

সৌদি বাংলা হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক ডা. শিরীন আক্তার জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। অপারেশন করার সময় দেখতে পাই নবজাতকের অবস্থান ঠিক জায়গায় ছিল না। এছাড়া নাড়িতেও জড়িয়ে ছিল। কিছুটা অংশ কেটে যায়। পরে সেলাই করে দেওয়া হয়।

সৌদি বাংলা হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম লিখন বলেন, এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে শিশুটির খোঁজখবর নিয়েছি। ওই শিশুটিকে সুস্থ করতে যাবতীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুর কোতয়ালী থানার এস.আই শামীম হাসান বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম, শিশুটির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা.পারভেজ জানান, শিশুটিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে ৭২ ঘণ্টার আগে কিছু বলা যাবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৪
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ