পাকিস্তানের পাঠানো আমন্ত্রণের ব্যাপারে নিশ্চিত করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, এসসিওর বৈঠকের জন্য আমরা পাকিস্তান থেকে আমন্ত্রণপত্র পেয়েছি।
অক্টোবরে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) বৈঠক রয়েছে। আন্তর্জাতিক ওই মঞ্চের এবারের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজিত হবে ইসলামাবাদে। পাকিস্তান আগেই দাবি করেছিল, এসসিওর সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রনেতাদের কাছে ইসলামাবাদ থেকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। ভারতকেও আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালুচ।
পিটিআই জানিয়েছে, শুক্রবার সাউথ ব্লকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রও এ আমন্ত্রণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ-ও জানিয়েছেন, আমন্ত্রণ পেলেও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক স্তরে সহযোগিতার লক্ষ্যে ২০০১ সালে তৈরি হয়েছিল সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন নামের এই মঞ্চ। রাশিয়া, চীনসহ ছয়টি দেশের রাষ্ট্রনেতারা সাংহাই শহরে বৈঠকে বসে তা তৈরি করেন। সেই থেকেই নাম সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন। ২০১৭ সাল থেকে ভারত ও পাকিস্তানও এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সদস্য রাষ্ট্র। কিন্তু প্রতিবেশী দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এই মুহূর্তে বেশ জটিল। উপত্যকায় জঙ্গি অনুপ্রবেশ থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদে মদদ—পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছে ভারত। এমনকি এই এসসিওর অতীত সম্মেলনেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরব হয়েছেন সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শুক্রবারই এক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় সন্ত্রাসবাদে মদদের অভিযোগ তুলেছেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন আলোচনার যুগ শেষ। সব কর্মেরই ফল ভুগতে হবে। তিনি আরও বলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে গিয়ে আমরা কখনোই সন্ত্রাসবাদকে উপেক্ষা করতে পারি না। পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভারত কোনোভাবেই এ ধরনের হুমকি বরদাশত করবে না। পাকিস্তান বরাবর আন্তর্জাতিক সীমান্তে সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে ভারতকে আলোচনার টেবিলে বসানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে ভারত কখনোই আলোচনায় বসবে না।
প্রসঙ্গত, এসসিওর সম্মেলনে কোনো দেশের রাষ্ট্রনেতাকেই উপস্থিত থাকতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এর আগে চলতি বছরেই জুলাইয়ে কাজাখস্তানে এসসিওর বৈঠকে থাকেননি মোদি। পরিবর্তে সেখানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর। আবার গত বছরেও গোয়ায় এসসিও বৈঠকে যাননি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। বদলে তিনি তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে পাঠিয়েছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২৪
এমজে