ঢাকা: ২০১৪ সালের ৮ মার্চের পর পেরিয়ে গেছে ১৯ মাস। আজ পর্যন্ত সন্ধান মেলেনি মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের খোয়া যাওয়া প্লেন এমএইচ৩৭০’র।
ভারত মহাসাগরের বিশাল অংশজুড়ে চলছে অনুসন্ধান। কিন্তু কোনো হদিস করা যাচ্ছে না বোয়িং-৭৭৭-২০০ইআর সিরিজের ওই প্লেনের। কখনও কখনও আশার সঞ্চার ঘটিয়ে কোথাও কোথাও কিছু আলামত মিললেও এমএইচ৩৭০’র গায়েব হয়ে যাওয়ার রহস্য থেকে যাচ্ছে আঁধারে। এবারও তেমনই একটি আলামত পাওয়া গেছে ফিলিপাইনে। তবে এবারের আলামত হৃদয়বিদারক বলেই মানছেন সবাই। কারণ দেশটির প্রত্যন্ত সুগবাই তাওই-তাওই প্রদেশের গহীন জঙ্গলে সন্ধান মিলেছে প্লেনের ধ্বংসাবশেষের সঙ্গে অনেকগুলো কঙ্কালেরও।
ধ্বংসাবশেষটিতে মালয়েশিয়ার পতাকা অঙ্কিত রয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। ফিলিপাইন পুলিশ এমন কিছু একটার সন্ধান পাওয়ার খবর জানতে পেরেছে বলেও নিশ্চিত করেছে।
![](files/October2015/October13/mh_m1_720629173.jpg)
জামিল ওমর নামে এক বেতার টেকনিশিয়ান পুলিশকে জানিয়েছেন, তার খালা সিতি কায়ামসহ কয়েকজন যখন ওই জঙ্গলে পাখি শিকার করছিলেন, তখনই তারা ধ্বংসাবশেষটির সন্ধান পান।
বোর্নিও পুলিশের কমিশনার জালালউদ্দিন আব্দুল রহমান জানিয়েছেন, ওই নারী দাবি করেছেন তিনি বিধ্বস্ত কাঠামোটির ভেতর প্রবেশ করে অনেকগুলো নরকঙ্কাল ও হাড় দেখেছেন। তিনি একটি মালয়েশিয়ার পতাকাও সেখানে দেখেছেন, যার দৈর্ঘ ৭০ ইঞ্চি ও প্রস্থ ৩৫ ইঞ্চি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, পাইলটের আসনে এখনও একটি কঙ্কাল রয়েছে। তিনি সেফটি বেল্ট লাগানো অবস্থায় রয়েছেন এবং তার মাথা ও কানে যোগাযোগযন্ত্র সংযুক্ত রয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৪ সালের ৮ মার্চ মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে চীনের বেইজিং যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের যাত্রীবাহী প্লেনটাই এটি। নিখোঁজ হওয়ার সময় এতে ২৩৯ জন আরোহী ছিলেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ফিলিপাইনে সন্ধান মেলা ধ্বংসাবশেষটি যদি এমএইচ৩৭০’র হয়ে থাকে, তাহলে খুব সম্ভবত এটি উত্তর-পূর্বের কোর্স পরিবর্তন করে পূর্বে উড়ে গিয়েছিল।
![](files/October2015/October13/mh_m2_211657408.jpg)
ফিলিপাইন নৌবাহিনীর টাস্ক ফোর্স-৬১’র কমান্ডার ক্যাপ্টেন জিওবান্নি বাকোর্দো জানিয়েছেন, গানবোটসহ একদল কর্মীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে।
তবে সুগবাই দ্বীপের অন্যরা এ ব্যাপারে কিছু জানেন না উল্লেখ করে জিওবান্নি বলেছেন, আমরা সেখানকার জেলেদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তার এ ব্যাপারে কিছুই জানে না। তবুও বিষয়টি অনুসন্ধান করছি আমরা। অনেক বড় একটি দ্বীপ এটি। লম্বায় সাড়ে তিন মাইল হবে।
এর আগে, গত ২৯ জুলাই ভারত মহাসাগরে ফরাসী দ্বীপ লা রিউনিয়নের সেইন্ট-আন্দ্রে সৈকতে ভেসে আসে একটি প্লেনের ধ্বংসাবশেষ। এটি কোনো বোয়িং-৭৭৭ সিরিজের প্লেনের ফ্ল্যাপেরন বলে নিশ্চিত হয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর দু’দিনের মাথায় ৩১ আগস্ট একই দ্বীপে সন্ধান মেলে ভাঙা স্যুটকেস, চীনা পানির বোতল ও ইন্দোনেশীয় পরিষ্কারক সরঞ্জাম। সন্দেহ ঘণীভূত হয়ে ওঠে, যদিও অনুসন্ধান এলাকা থেকে এই দ্বীপ চার হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। কিন্তু ধ্বংসাবশেষ সন্ধান পাওয়া পর্যন্তই এ রহস্যের জট উন্মোচিত হয়েছে এখন পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫
আরএইচ