যদিও রাশিয়া ওই অভিযোগ অস্বীকার করে। কিন্তু এরই সূত্রে চুক্তিটি অকার্যকর হয়ে যাওয়ায় এবার রাশিয়া ওই চুক্তির আওতায় এতকাল নিষিদ্ধ বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর ভ্লাদিভস্তকে এক অর্থনৈতিক ফোরামে বক্তৃতাকালে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এসব কথা বলেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্র যদি এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা থেকে নিজেদের বিরত রাখে, সেক্ষেত্রে মস্কোও তা মোতায়েন করা থেকে বিরত থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
নতুন করে অস্ত্র প্রতিযোগিতার আশঙ্কা জানিয়ে পুতিন বলেন, মস্কোর পক্ষ থেকে অস্ত্র প্রতিযোগিতা হ্রাসে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানানো হলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি। বরং জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে যাচ্ছে, রাশিয়ার বিভিন্ন অংশ এসব ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় পড়বে, এটি নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা জানান তিনি।
শুধু তাই নয়, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম, নতুন করে এরকম একটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষাও চালায়। আইএনএফ চুক্তিতে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিষিদ্ধ ছিল।
ওই চুক্তির আওতায় ৩১০ মাইল থেকে ৩ হাজার ৪০০ মাইল পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিষিদ্ধ ছিল। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র স্বল্প সময়ের মধ্যে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। তা ঠেকাতেই ওই চুক্তি সম্পাদিত হয়।
কিন্তু বর্তমানে চুক্তিটি অকার্যকর হওয়ায় পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধি ও অস্ত্র প্রতিযোগিতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে করে সার্বিক বিশ্ব পরিস্থিতিই নতুন জটিলতার মুখে পড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি জানিয়ে পুতিন বলেন, অবশ্যই আমরা এ জাতীয় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করবো। আমরা মোটেও আনন্দিত নই, পেন্টাগন প্রধান আমাদের জানিয়েছেন, তারা জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে যাচ্ছে। এ খবরে আমরা বিমর্ষ এবং এটি নিঃসন্দেহে উদ্বেগের বিষয়।
পুতিন আরও জানান, সম্প্রতি তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোন করে বলেন, তারা চাইলে মস্কোর কাছ থেকে একটি হাইপারসোনিক পরমাণু অস্ত্র কিনতে পারে। কিন্তু প্রত্যুত্তরে ট্রাম্প বলেন, ওয়াশিংটন নিজেই তেমন অস্ত্র তৈরি করছে।
সার্বিক পরিস্থিতিতে মহাকাশে নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ওয়াশিংটন নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে পারে বলেও উদ্বেগ জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯
এইচজে