ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

হামলা ঠেকাতে সৌদিকে রুশ মিসাইল কেনার প্রস্তাব পুতিনের 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯
হামলা ঠেকাতে সৌদিকে রুশ মিসাইল কেনার প্রস্তাব পুতিনের 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী ও আঞ্চলিক বিভিন্ন শত্রুপক্ষের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার শিকার হচ্ছে সৌদি আরব। সর্বশেষ গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সেখানকার বিশাল এক তেল স্থাপনায় ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। বিশ্বের সর্ব বৃহৎ ওই তেল স্থাপনায় হামলার ঘটনায় বিশ্বনেতারা উদ্বিগ্ন। এ হামলার জেরে এরই মাঝে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় হুমকির মুখে পড়েছে বিশ্বব্যাপী তেলের বাজার। 

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিজেদের প্রতিরক্ষা ও বিভিন্ন রকম হামলার হাত থেকে বাঁচতে সৌদি আরবকে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা কেনার পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।  

সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) তুরস্কের রাজধানী আংকারায় সিরিয়া যুদ্ধ নিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে এ প্রস্তাব দেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

 
সৌদির সর্বশেষ হামলা প্রসঙ্গে পবিত্র কোরান থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে পুতিন বলেন, ‘কোরানে বলা আছে, যে কোনো ধরনের যুদ্ধ ও সহিংসতাই অগ্রহণযোগ্য। কেবলমাত্র একটি ক্ষেত্রেই যুদ্ধ বা প্রতিরোধ গ্রহণযোগ্য, আর তা যদি হয় নিজের লোকদের সুরক্ষার খাতিরে। ’

‘নিজের লোকদের সুরক্ষার খাতিরে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে আমরা সৌদি আরবের পাশে আছি। তাদের বুদ্ধিমানের মতো সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেমন ইরান আমাদের এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা কিনে বুদ্ধিমানের পরিচয় দিয়েছে। যেমন তুরস্ক আমাদের সর্বাধুনিক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা কিনে বুদ্ধিমানের পরিচয় দিয়েছে। ’ 

পুতিন জোর দিয়ে বলেন, (আমাদের) এসব আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সৌদি আরবের যে কোনো স্থাপনাকে যে কোনো রকম হামলা থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম।  

শনিবার সৌদি আরবের ওই তেল প্রক্রিয়াজাতকরণ স্থাপনা ও খনিতে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা হামলার দায় স্বীকার করলেও, যুক্তরাষ্ট্র সে ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে আসছে। শুধু তাই নয়, এর জবাব দিতে যুক্তরাষ্ট্র রণসাজে প্রস্তুত বলেও হুমকি জানান ট্রাম্প। অন্যদিকে ইরানও যুক্তরাষ্ট্রের ওই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় জানায় যে, তারাও আমেরিকার সঙ্গে ‘সর্বাত্মক’ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।  

এই যখন পরিস্থিতি ঠিক তখনই মার্কিন মিত্র সৌদি আরবকে রুশ অস্ত্র কেনার পরামর্শ দিলেন ইরানের মিত্র ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিনের এ প্রস্তাব বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বেশ কিছু মার্কিন সংবাদমাধ্যম মন্তব্য করেছে, রাশিয়া আসলে সৌদিতে হামলার ঘটনা পুঁজি করে ‘ঝোপ বুঝে কোপ মারতে চাইছে’। অস্ত্র বিক্রির মধ্য দিয়েই দেশটি ইরান, তুরস্ক ও সৌদি আরবের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চায়। আবার কিছু কিছু মার্কিন সংবাদমাধ্যম বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সৌদি আরবকে অস্ত্র কেনার পরামর্শ দিয়ে ইরান ও তুরস্কের মিত্র রাশিয়া আসলে মজা নিয়েছে।  

নিউ ইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুতিনের বক্তব্যের সময় ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি তার পাশেই বসা ছিলেন। তিনি সে সময় হাসছিলেন। এছাড়া দর্শক সারিতে বসে থাকা ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফও পুতিনের কথা শুনে মুখ টিপে হাসছিলেন বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯  
এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।