গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) হয়ে যাওয়া ইসরায়েলের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়, আসন সংখ্যার দিক থেকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বেনি গান্টজের নীল ও সাদা দলের থেকে পিছিয়ে পড়েছে নেতানিয়াহুর ডানপন্থি লিকুদ পার্টি। ফলে সরকার গঠনের দৌড়ে এখন এগিয়ে বেনি গান্টজ।
ইসরায়েলের পার্লামেন্ট ‘নেসেট’-এ মোট আসন সংখ্যা ১২০টি। সংবিধান অনুসারে, সরকার গঠন করতে হলে যে কোনো দল বা জোটকে অন্তত ৬১ আসন নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনী ফলে দেখা যায়, ১২০ আসনের মধ্যে মধ্যপন্থি উদার রাজনৈতিক জোট নীল ও সাদা দল পেয়েছে মোট ৩৩ আসন। অন্যদিকে লিকুদ পার্টি নিশ্চিত করতে পেরেছে মাত্র ৩১টি আসন। ফলে লিকুদ পার্টির নেতৃত্বে সরকার গঠনের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে নেতানিয়াহুর।
এদিকে মূল দুই দলের কেউই সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সরকার গঠনের অবস্থায় না থাকায় এখন তাদের সমমনা দলগুলোকে খুঁজে বের করতে হবে। এ অবস্থায় প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী গান্টজের সঙ্গেই জোট সরকার গড়ার অনুনয় জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।
কিন্তু, তা করলেই তো হবে না। নেতানিয়াহুকে একঘরে করে রাখতে যেন পণ করেছেন বেনি গান্টজ। তিনি সাফ জানিয়েছেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে কোনো জোট নয়। লিকুদ পার্টিকে বাইরে রেখেই নতুন সরকার গঠন করবেন তিনি। শুধু তাই নয়, এরই মাঝে গান্টজ জাতীয়তাবাদী ‘ইসরায়েল বেতিনু’ পার্টি ও বামপন্থি লেবার-গেসার ও ডেমোক্রেটিক ক্যাম্প পার্টির সঙ্গে নতুন সরকার গঠনের ব্যাপারে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন। ফলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে দীর্ঘ নেতানিয়াহু যুগের অবসান ঘটতে চলেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক টুইট বার্তায় বেনি গান্টজ জানান, তিনি জোট সরকার গঠনে নেতানিয়াহুর প্রস্তাবে সাড়া দেবেন না। তাকে মাইনাস করেই হবে নতুন সরকার। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতেও সরকার গঠন করতে পারলে, সেখানে নেতানিয়াহুকে রাখা হবে না বলে জানিয়েছিলেন গান্টজ। এর মধ্য দিয়ে আবারও সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
নেতানিয়াহুর জোট গড়ার প্রস্তাবকে তীব্র কটাক্ষ করে গান্টজ লেখেন, আমরা সবার কথাই শুনবো। কিন্তু আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া কোনো আদেশ (নেতানিয়াহুর প্রস্তাব) মান্য করবো না।
‘আমি আমার নেতৃত্বে একটি বৃহৎ ও উদার জোট সরকার গঠনের ব্যাপারে আগ্রহী। ’
এদিকে গান্টজের নীল ও সাদা দল যদি জোট গড়ার মধ্য দিয়ে নেসেটের অন্তত ৬১ আসন নিশ্চিত করতে না পারেন, সেক্ষেত্রে আবারও ইসরায়েলের রাজনীতি এক অচলাবস্থার মধ্যে পড়বে। তখন হয়তো এ বছরেই দ্বিতীয়বারের পুনর্নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে ইসরায়েলে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেবার কোনো দল বা জোট ৬১ আসন নিশ্চিত করতে না পারায়, সেপ্টেম্বরে পুননির্বাচনের আয়োজন করা হলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯
এইচজে