ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

হংকং ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে বিল পাস, হুঁশিয়ারি চীনের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৯
হংকং ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে বিল পাস, হুঁশিয়ারি চীনের বিল পাসের পর হংকংয়ে উড়ানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা। ছবি: সংগৃহীত

চীনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) বিল পাস হয়েছে। বিলটি চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলন ও কানাডা সরকারের সঙ্গে চীনা টেক জায়ান্ট হুয়াওয়ের শীর্ষ আর্থিক কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝুর প্রত্যর্পন নিয়ে চীনের সঙ্গে বৈপরীত্য বিষয়ক। বিল পাস হয়েছে কণ্ঠভোটে। ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান উভয় দলের সদস্যরা চাইছেন, হংকংয়ে চলমান আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে চীনের বিরুদ্ধে যেন আগ্রাসী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর)  বিল পাস হয় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা বিল পাস করিয়েছেন হংকংয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতি সমর্থন জানাতে।

একইসঙ্গে চীনা টেক জায়ান্ট হুয়াওয়েকে যেন বাগে আনা যায় এ চেষ্টার কমতি নেই তাদের।  যুক্তরাষ্ট্রের এ পদেক্ষেপ অনুমিতভাবে ক্ষিপ্ত করে তুলেছে চীনকে। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া বিবৃতি এরই প্রমাণ। বিবৃতিতে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, হংকংয়ের আন্দোলন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের নাক গলানো মোটেও পছন্দ করছে না বেইজিং।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গং শুয়াং বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে পাস হওয়া হংকং হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি অ্যাক্ট নামক তথাকথিত বিলের কারণে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি এর তীব্র বিরোধীতা করছি। এ বিল যদি যুক্তরাষ্ট্রে কোনোভাবে আইনে রূপ লাভ করে তবে দেশটির সঙ্গে চীনের সম্পর্ক ধুলিস্মাৎ হয়ে যেতে পারে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে এমন সময় বিল পাস হলো যখন হোয়াইট হাউস চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের ইতি ঘটাতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, হংকং তার স্বায়ত্তশাসন ধরে রাখার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে সে বিষয়ে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিবেদনের প্রয়োজন হবে।

দ্বিতীয়ত, আন্দোলনকারীদের ওপর আন্দোলন-জমায়েত দমনে পুলিশ ব্যবহার করতে পারে এমন সামরিক সরঞ্জামের বাণিজ্যিক রপ্তানি নিষিদ্ধ করতে হবে।

তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হংকংয়ের সম্পর্কে চীনের ‘হস্তক্ষেপ’র নিন্দা এবং অঞ্চলটির বাসিন্দাদের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানানোর কথা বলা হয়েছে।

চতুর্থ বিষয়টি চীনা টেক জায়ান্ট হুয়াওয়ের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মেং ওয়ানঝুর প্রত্যর্পন বিষয়ক। যাকে গত বছরের ডিসেম্বরে কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষ দেশটির বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছিল। মেং ওয়ানঝু হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেন ঝেংফেইয়ের মেয়ে।

প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া বিল সিনেটে উত্থাপন করা হবে। তবে, এ বিলের ওপর সিনেটে কবে বা কখন ভোট হবে তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।

এদিকে সিনেটে হংকং বিষয়ক বিল নিয়ে আগামী সপ্তাহে ভোটাভুটি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটি। পরে সিনেট থেকে বিলটি সইয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পাঠনো হবে। যদি ট্রাম্প এতে সই করেন তবে তা আইন হিসেবে পরিগণিত হবে।

১৯৯৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে চীনের সঙ্গে যুক্ত হয় হংকং। অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে হংকংয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে বেশ কয়েকমাস আগে। পরে তীব্র বিক্ষোভ ও প্রতিরোধের মুখে বিলটি প্রত্যাহার করে নেয় কর্তৃপক্ষ। এরপরও একেবারে থেমে যায়নি আন্দোলন। বিক্ষোভকারীদের মুখোশ পরায় নিষেধাজ্ঞা জারির পর আবারও আন্দোলন করতে দেখা যায় চীনের বিশেষ প্রশাসনিক এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৯
এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।