ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রাখাইনে গ্রামবাসীর ওপর মিয়ানমার সেনাদের গুলি, নিহত ১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৯
রাখাইনে গ্রামবাসীর ওপর মিয়ানমার সেনাদের গুলি, নিহত ১ আহত বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র। ছবি: সংগৃহীত

রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গুলিতে এক বেসামরিক নাগরিক নিহত ও এক বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) কিয়োকটো পৌরসভার শুয়ি লাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম ইউ কালার মং (৫০)।

তিনি পার্শ্ববর্তী সিট অং গ্রামের বাসিন্দা। আর আহত ব্যক্তির নাম কো নে সান উইন (২৪)। তিনি সিটওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

কো নে সানের বাবা বলেন, এটা কোনো সংঘর্ষের ঘটনা নয়। তারা (মিয়ানমার সেনা) ইউ কালার মংকে সিট অং থেকে শুয়ি লাই গ্রামে নিয়ে এসেছিল। গ্রামে পৌঁছামাত্র তিনি দৌঁড় দেন। আর সেনারা তাকে গুলি করে। ওইসময় আমার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি বের করছিল। তার গায়ে গুলি লেগেছে। গাড়িটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে, একজন নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করলেও ছাত্রের গায়ে গুলি লাগার কথা অস্বীকার করেছেন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ডের মুখপাত্র কর্নেল উইন জা উ।  

তিনি বলেন, সেনারা টহল দেওয়ার সময় ইউ কালার মংকে শুয়ি লাই গ্রামে একটি লেকের কাছে টেলিফোন ব্যবহার করতে দেখে। আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। এজন্য ফের আটকের উদ্দেশ্যে তাকে গুলি করা হয়।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এ মুখপাত্র বলেন, আহত ছেলেটি গাড়ির কাছে ছিল। গুলি গাড়ির কাচে লাগে আর সে ভাঙা কাচের টুকরোর আঘাতে আহত হয়। তাকে গুলি করা হয়নি।

এর জন্য সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সেনাবাহিনীর বরাতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, নিহত ইউ কালার মং চাল ব্যবসায়ী ছিলেন। তবে, সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল বলে দাবি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। তার কাছ থেকে একটি গ্রেনেড ও আরাকান আর্মির কাছে পাঠানো মেসেজসমৃদ্ধ দু’টি মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান উত্তেজনার জেরে রাখাইনে হতাহতের সংখ্যা যথেষ্ট বেড়ে গেছে। দেশটির এক সংসদ সদস্যের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত অন্তত ৮০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ১২০ জন আহত হয়েছেন। আগস্টের পরেও বেশ কয়েকবার হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে, এর কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য জানা যায়নি।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মাধ্যমে রাখাইন রাজ্য থেকে অত্যাচারিত হয়ে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা দেশত্যাগ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ ঘটনার পর থেকেই বিশ্বব্যাপী মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও দেশটির সরকারের কঠোর সমালোচনা শুরু হয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রাখাইনে ‘গণহত্যা’ চালিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও মিয়ানমারের অসহযোগিতায় তা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।