ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজ্যের সুনদারেসাপুরাম গ্রামে থেনপেন্নাই নদীর তীরে একটি গর্ত খুঁড়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আটক করা হয় শিশুটির বাবা বরধরাজনকে (২৯)।
শিশুটির মায়ের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, ১৭ দিন আগে পন্ডিচেরি হাসপাতালে একটি কন্যাশিশুর জন্ম দেন তিনি। তখন থেকেই শিশুটিকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছেন পুত্রপাগল বরধরাজন। কন্যা জন্ম দেওয়ায় তার ওপর মানসিক নির্যাতনও চালিয়েছেন তিনি।
শিশুটির বয়স যখন তিনদিন, তখনই একবার তাকে হত্যার চেষ্টা করেন বরধরাজন। ওই সময় স্বজনদের চোখে পড়ে যাওয়ায় পালিয়ে যান তিনি। পরে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) শিশুটির মা ঘুমিয়ে পড়লে নবজাতকটিকে চুরি করে নদীর তীরে চলে যান বরধরাজন।
সকালে ঘুম থেকে ওঠে বাচ্চাটিকে দেখতে না পেয়ে চিৎকার জুড়ে দেন মা। পুলিশকে খবর দিলে তল্লাশি চালিয়ে বরধরাজনকে আটক করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যতেই নদীতীরে গর্ত খুঁড়ে উদ্ধার করা হয় বাচ্চাটির নিথর দেহ।
এদিকে, শিশুটির মরদেহ উদ্ধারের পর শোকের ছায়া নেমে এসেছে গ্রামটিতে। বরধরাজনের বিরুদ্ধে শিশুহত্যার অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।
এর আগে, ৩১ অক্টোবর হায়দ্রাবাদে মেয়ে নবজাতককে জীবন্ত অবস্থায় মাটিচাপা দেওয়ার সময় তার বাবা ও দাদাকে আটক করে পুলিশ। একই ঘটনায়, ১৪ অক্টোবর দেশটির উত্তর প্রদেশ থেকে আরও এক বাবাকে আটক করা হয়।
ভারতে লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে প্রায়ই কন্যাশিশুকে মাটিচাপা বা গলাটিপে হত্যার খবর আসে গণমাধ্যমে। তবে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এসব ঘটনা বেশি হওয়ায় বেশিরভাগ খবরই চাপা পড়ে যায়।
পুত্র সন্তানকে প্রাধান্য দেওয়ায় প্রতিবছর দেশটিতে লাখ লাখ শিশু ভ্রুণ অবস্থাতেই প্রাণ হারায়। এ কারণে দেশটিতে গর্ভাবস্থায় জটিলতা ছাড়া ভিন্ন কারণে আল্ট্রাসনোগ্রাম (ডাক্তারি পরীক্ষায় গর্ভে ছেলে অথবা মেয়ের ছবি) নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এরপরও হরিয়ানা, তেলেঙ্গানাসহ বিভিন্ন রাজ্যে এমন ঘটনা হরহামেশাই ঘটে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৯
কেএসডি/এইচএ/