রোববার (১৮ নভেম্বর) টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তিনি বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ জনগণ করতেই পারে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে অন্তত ৮৭ হাজার মানুষ বিক্ষোভ করছে। ইতোমধ্যে বিক্ষোভকালীন সহিংসতায় দুইজনের প্রাণহানিও হয়েছে।
চলমান বিক্ষোভে অন্তত ১২টি ব্যাংক ও দোকানে আগুন দেওয়ার সময় এক হাজার বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় সংঘর্ষে আহত হয়েছে অনেকে।
রুহানি বলেন, বিক্ষোভকারীদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। যদি তাদের কিছু বলার থাকে, তবে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মধ্য দিয়ে তা পেশ করার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, বিক্ষোভকারীদের সমর্থন দিয়ে হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে ইরান সরকারের সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তেহরানের ওপর আরোপিত অবরোধ ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে এতে।
তবে ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার অর্থ নেই। জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধি দেশের দুরাবস্থা কাটানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।
এদিকে, বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে জড়িয়ে না পড়ে সরকারের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ইরান নাশকতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি রুখতে হবে।
গত দু’বছর ধরে পারমাণবিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখার অভিযোগে তেহরানের ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে দেশটি অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
এরপর, ওয়াশিংটন বারবার আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলেও সেটি ‘লোক-দেখানো’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
সম্প্রতি সংকট উত্তরণে জ্বালানি তেল ও পেট্রোলের দাম দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি। ১৫ নভেম্বর থেকে নির্ধারিত দামের দ্বিগুণ মূল্যে তেল কিনতে হচ্ছে জনগণকে। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করছে তারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সিরজান, কারমেনশাহ ও তেহরানে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে ইরান সরকার। শিগগিরই এ নিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সমঝোতায় আসারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে শর্ত হিসেবে বিক্ষোভকারীদের সহিংস না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
কেএসডি