ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৪ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২০
জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র হাজার হাজার মানুষ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে পুলিশের হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক আফ্রিকান আমেরিকান নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে টানা চতুর্থ দিনে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা দেশ।

শনিবার (৩০ মে) বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।

শুক্রবার (২৯ মে) হোয়াইট হাউসের বাইরে হাজার হাজার মানুষ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

এদিন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে মিনেসোটা, নিউইয়র্ক এবং ক্যালিফোর্নিয়া।

সোমবার (২৫ মে) শ্বেতাঙ্গ এক পুলিশ কর্মকর্তার হাতে ৪৬ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মিনিয়াপোলিসসহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি শহরে পুলিশি সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়।

ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের এক কর্মকর্তা ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর হাঁটু দিয়ে তাকে মাটিতে চেপে ধরে রেখেছেন। এসময় ফ্লয়েড বলেছেন, ‘প্লিজ, আমি শ্বাস নিতে পারছি না’, ‘আমাকে মারবেন না। ’

শ্বেতাঙ্গ এক পুলিশ কর্মকর্তার হাতে ৪৬ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়।  ছবি: সংগৃহীতফ্লয়েডের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ২০ ডলারের একটি জালনোট ব্যবহার করেছিলেন। তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের গাড়িতে নেওয়ার আগে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, হাতকড়া পরাতে বাধা দিচ্ছিলেন তিনি।

তবে পুলিশের সঙ্গে ফ্লয়েড কীভাবে সংঘর্ষে জড়ালেন তা ভিডিওতে দেখা যায়নি।

এ ঘটনায় নিরস্ত্র ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর হাঁটু রাখা ৪৪ বছর বয়সী পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনসহ চারজন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ফ্লয়েডকে হত্যার অভিযোগে ডেরেক শভিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (১ জুন) তার আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে।

এ ঘটনাকে ‘ভয়ানক, ভয়ানক ব্যাপার’ বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের সামনে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। এসময় তাদের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের ছবি ছিল এবং তারা স্লোগান দেন, ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না। ’

হাজার হাজার মানুষ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।  স্থান- হাউসটন, টেক্সাস।  ছবি: সংগৃহীতবিক্ষোভের ঘটনায় হোয়াইট হাউস সাময়িকভাবে লকডাউন ঘোষণা করা হয় এবং এর প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

প্রবল বিক্ষোভের মুখে শুক্রবার ও শনিবার দু’দিন রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয় মিনিয়াপোলিস এবং সেইন্ট পল শহরে। কিন্তু শুক্রবার কারফিউ উপেক্ষা করে রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা। এসময় একাধিক ভবন এবং যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। নিউইয়র্ক, লস এঞ্জেলেস, শিকাগো, ডেনভার, হাউসটন, লুইভিল, ফিনিক্স, কলাম্বাস এবং মেমফিসসহ অনেক শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সহিংস সংঘর্ষ হয়।

আটলান্টায় সংবাদমাধ্যম সিএনএনের দপ্তরের পাশেই ভবনে ভাঙচুর এবং পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

বিক্ষোভের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২৮ মে) মিনিয়াপোলিসের একটি পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।

ফ্লয়েডের ময়নাতদন্তের সম্পূর্ণ প্রতিবেদন এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর প্রায় ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড ধরে হাঁটু চেপে রেখেছিলেন শভিন। শেষ তিন মিনিট ফ্লয়েডের কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি, তিনি অসাড় হয়ে গিয়েছিলেন। হাঁটু সরানোর দু’ মিনিট আগে অন্য এক পুলিশ কর্মকর্তা ফ্লয়েডের ডান হাতের কব্জি ধরে নাড়ি পরীক্ষা করে দেখেন কোনো স্পন্দন নেই। পরে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হেনেপিন কাউন্টি মেডিক্যাল সেন্টারে নেওয়া হয় এবং এর প্রায় এক ঘণ্টা পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৪ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২০
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।