কোনো জাতিরই অন্য দেশের ওপর হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়, বৈশ্বিক বিধি-নিষেধ আরোপ করাও উচিত নয় বলে মনে করে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং।
জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক সমালোচনার কারণে বেইজিং অসন্তুষ্ট বলেও জানান তিনি।
গত মঙ্গলবার এশিয়ার একটি বার্ষিক বোয়াও ফোরামে বক্তব্য দেওয়ার সময় আমেরিকা ও তার মিত্রদের উদ্দেশে শি এ কথা বলেন।
শি জিনপিং বলেন, বিশ্বের গন্তব্য এবং ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত প্রতিটি দেশের নিজেদের নির্ধারণ করা উচিত। এক বা একাধিক দেশের দ্বারা নির্ধারিত বিধিগুলো অন্যের ওপর চাপানো উচিত নয়। শি যোগ করে বলেন, সমগ্র বিশ্বকে কিছু দেশের একতরফাবাদ দ্বারা পরিচালিত করা উচিত নয়। বাইডেন মার্কিন-জাপানি জোটের পক্ষে তার 'আয়রক্ল্যাড' সমর্থন নিশ্চিত করার এক দিন পরেই এ কথা বললেন শি।
এর আগে বাইডেন ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান উভয় দেশই মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চীনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছে। এবং হুমকি মোকাবেলায় সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য বদ্ধপরিকর।
বাইডেন বলেন, ‘আজ, প্রধানমন্ত্রী সুগা (জাপান) এবং আমি মার্কিন-জাপানি জোট এবং আমাদের সুরক্ষার জন্য আমাদের দৃঢ় সমর্থনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছি। আমরা চীনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার জন্য এবং পূর্ব চীন সাগর, দক্ষিণ চীনের জাতীয় ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হচ্ছি। আমাদের অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে। ’
এক যৌথ বিবৃতিতে জাপানের প্রেসিডেন্ট সুগা বলেন, আমেরিকা ও জাপান উভয়ই পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরে বল প্রয়োগ করে স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের যেকোনো প্রয়াসের বিরোধিতা করতে সম্মত হয়েছে। তাইওয়ান এবং জিনজিয়াংয়ে অধিকার সম্পর্কিত প্রশ্নে জাপানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করতে গিয়েছিলাম, তাই আমরা তাইওয়ান ও জিনজিয়াং-উইঘুরের স্বায়ত্তশাসন পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছি।
পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সমুদ্রের ক্রমবর্ধমান চীনা আগ্রাসনের মধ্যে সুগার এ বক্তব্য প্রতিবেশীদের মধ্যে গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বেইজিং সাম্প্রতিক সময়ে তাইওয়ান স্ট্রাইটের কাছেও সামরিক আগ্রাসন বাড়িয়েছে। হংকংভিত্তিক ইংরেজি দৈনিকের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ায় জোট সমর্থন জোরদার করতে শুরু করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তনি ব্লিংকেনও শক্ত অবস্থানে থেকে চীনকে প্রতিহত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন এবং কানাডা চীনের ওপর সমন্বিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এদিকে, বেইজিং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বেশ কয়েকজন ব্যক্তির ওপর ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২১
নিউজ ডেস্ক