ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

চীনা মঙ্গোলিয়ানদের সমর্থনে জাপানি আইপ্রণেতাদের জোট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২১
চীনা মঙ্গোলিয়ানদের সমর্থনে জাপানি আইপ্রণেতাদের জোট

চীনা সরকারের অধীন থেকে মঙ্গোলীয় সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে বুধবার একটি সংসদীয় জোট গঠন করেছেন জাপানি আইনপ্রণেতারা। লিবারেল ডেমোতক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সহযোগী সদস্যদের সাথে এ জোটের নেতৃত্ব দেবেন সাবেক অভ্যন্তরীণ বিষয়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী সানা তাকাইচি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ মঙ্গোলিয়াকে সমর্থন করার লক্ষ্য হলো, মঙ্গোলিয়ানদের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা করা যা ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) নীতিমালার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে। এই সংস্কৃতি নিভিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। বর্তমানে জাপানে বসবাসরত জাতিগত মঙ্গোলিয়ান তেমুরলুন বলছে, চীনের উত্তরাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়া অঞ্চলের মঙ্গোলিয়ানদের জন্য এই পদক্ষেপ বড় ধরনের এক আশার বাণী তৈরি করবে। এই জোট শুরুর আগে জাপানে আইনপ্রণেতারা চীনে মঙ্গোলিয়ান ভাষা ও সংস্কৃতির ব্যবহার না করায় প্রতিবাদ জানিয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করে।

জাপানভিত্তিক মঙ্গোলিয়ান খুবিসের মতে, স্বাধীন দেশ মঙ্গোলিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মঙ্গোলীয় সংস্কৃতি রক্ষার্থে জাপানি আইনপ্রণেতাদের কাছে পরামর্শও রেখেছিলেন। বুধবার শি হাইমিং এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। শি বলেন, 'জাপানি আইনপ্রণেতারা চীন সরকার কর্তৃক মানবাধিকারের অত্যাচার ও অপব্যবহারকে অনেক বেশি গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে'। তিনি আরো বলেন, ২০২০ সালের আগস্ট থেকে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি মঙ্গোলিয়ান স্কুলগুলোতে শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ করে দেয় যা পরবর্তীতে তীব্র প্রতিবাদের কারণ হয়। জাপানের শিজুওকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়াং হাইয়িং বলেছেন, অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়ানদের প্রতি জাপানের  বিশেষ মায়া রয়েছে, কারণ এই অঞ্চলের কিছু অংশ জাপানি উপনিবেশে ব্যবহৃত হতো।

এদিকে, ২০২০ সালের ডিসেম্বর চীনা ভাষা শেখার ক্যাম্পেইনে মঙ্গোলিয়ান প্রাপ্তবয়স্কদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়। পিপলস ডেইলির মার্চে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে মঙ্গোলীয়দের ওপর চাপিয়ে দেওয়া শিক্ষার এ বিষয়টি অসাংবিধানিক। এর রায়ে সংবিধানের ৪ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সব জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব কথ্য ও লিখিত ভাষা ব্যবহার ও বিকাশ করার এবং নিজস্ব লোকজ ও রীতিনীতি সংরক্ষণ বা সংস্কার করার স্বাধীনতা এবং অধিকার রয়েছে।

এরই মধ্যে আঞ্চলিক সরকার মঙ্গোলীয় ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তককে শ্রেণিকক্ষ থেকে নিষিদ্ধ করেছে। অভিভাবকরা বলছেন, বর্তমানে স্কুলে মঙ্গোলীয় সংস্কৃতির কোনো উল্লেখ করার অনুমতি নেই, এমনকি মঙ্গোলিয়ান ভাষার স্কুলেও মঙ্গোলিয়ান ভাষার চেয়ে মান্দারিন ভাষাতে শেখানো হচ্ছে, যেমনটি আগে ছিল।

মঙ্গোলীয়রা এর আগে সিরিলিক বর্ণমালা ব্যবহার করে ভাষা রচনা করেছিল, কিন্তু এখন সোভিয়েত দখলের সেই প্রতীক থেকে দূরে সরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে, যেন মঙ্গোলীয় লেখা চীনের সীমান্ত পেরিয়ে জাতিগত মঙ্গোলিয়ানরা সহজেই পড়তে পারে আর তা জাতিগত ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের ধারণাকে আরো জোরালোভাবে উপস্থাপন করে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২১
নিউজ ডেস্ক 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।