ভারতের মাদক নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার (এনসিবি) তদন্তকারী কর্মকর্তা সমীর ওয়াংখেড়েকে নিয়ে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছে মহারাষ্ট্রের উন্নয়নমন্ত্রী ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা নবাব মালিক।
এবারে এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠলো, তাতে এনসিবি দফতরে তার চাকরির বৈধতা নিয়িই উঠেছে জোর প্রশ্ন।
সমীর ওয়াংখেড়ের বিয়ের একটি ছবি সামনে আসায় উঠেছে এ প্রশ্ন।
বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি ছবি পোস্ট করেন মহারাষ্ট্রের উন্নয়নমন্ত্রী ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা নবাব মালিক।
ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘এক মিষ্টি দম্পতির ছবি। সমীর দাউদ ওয়াংখেড়ে এবং চিকিৎসক শাবানা কুরেশি’।
বর্ণনায় কিছুটা ব্যঙ্গের সুরেই লেখেন, এক মিষ্টি দম্পতির ছবি। সমীর দাউদ ওয়াংখেড়ে এবং চিকিৎসক শাবানা কুরেশি। এখনকার এনসিবি কর্তা সমীর ২০০৬ সালের ওই ছবিতে একজন অল্পবয়সী যুবক। বিয়ের দিন প্রথম স্ত্রী শাবানাকে নিয়ে ছবিটি তুলিয়েছিলেন তিনি।
ওই ছবি এবং তার পরে সমীরের মুসলিম মতে বিয়ের সার্টিফিকেট বা নিকাহনামা প্রকাশ করে নবাব জানিয়েছেন, সমীরের ধর্ম নিয়ে তার কোনও আপত্তি নেই। তিনি শুধু চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে চান, সমীর একজন অসৎ ব্যক্তি। যিনি চাকরির প্রয়োজনে খাতা-কলমে নিজের ধর্ম কিংবা জাতি বদলে ফেলতেও দ্বিধাবোধ করেননি।
এর আগে সমীরের বিরুদ্ধে তদন্তে অনিয়ম, নির্দোষ ব্যক্তিকে অকারণে হেনস্তা করার মতো অভিযোগ এনেছেন নবাব। মঙ্গলবার সমীরের বিরুদ্ধে ২৬টি অনিয়মের বিবরণ দেওয়া একটি চিঠি টুইটারে প্রকাশ করেছিলেন। তার আগে সোমবার তিনি বলেছিলেন, মুসলিম হয়েও স্রেফ চাকরি পাওয়ার জন্য জাত-পাতের ভুয়া সার্টিফিকেট দাখিল করেছিলেন সমীর। সেখানে নিজেকে প্রান্তিক হিন্দু বলে দাবি করেছিলেন। প্রান্তিক জাতির সংরক্ষণের সুবিধা নিয়েই ভারতীয় গোয়েন্দা বিভাগে চাকরি নিয়েছিলেন এনসিবি কর্তা। বুধবারের ছবিটি সেই দাবিরই প্রমাণ।
নবাব বলেছিলেন, এনসিবির রেকর্ডে সমীরের বাবার নাম জ্ঞানদেব ওয়াংখেড়ে লেখা থাকলেও আসলে তার নাম দাউদ। নবাবের দাবি অবশ্য তখন অস্বীকার করেছিলেন সমীরের বাবা। বুধবার সকালে ছবিটি প্রকাশ করার পর অবশ্য তাদের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
বুধবার নবাব এ-ও বলেন, ২০০৬ সালের ৭ ডিসেম্বর সমীর এবং শাবানার বিয়েতে দ্বিতীয় সাক্ষী ছিলেন তাঁর বোন ইয়াসমিনের স্বামী আজিজ খান।
নবাবের অভিযোগের পাশাপাশি সমীরের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি টাকার একটি ঘুষ কেলঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছে। মুম্বাইয়ের মাদক মামলার অন্যতম সাক্ষী প্রভাকর সইল একটি হলফনামা প্রকাশ করে সোমবার জানিয়েছিলেন, আরিয়ানকে রেহাই দেওয়ার জন্য শাহরুখ খানের ম্যানেজার এবং বেসরকারি গোয়েন্দা কিরণ গোসাভির মধ্যে কোনো চুক্তি হয়েছিল। যে বিষয়ে গোসাভির কথোপকথনে তিনি স্পষ্ট শুনেছিলেন সমীরের নাম।
মুম্বাইয়ের জোনাল অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে আট কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন গোসাভি। প্রভাকর জানিয়েছিলেন, এই অভিযোগের প্রমাণও আছে তার কাছে। যা তিনি প্রকাশ্যে আনবেন গোসাভি আত্মসমর্পণ করার পরই। প্রভাকরের ওই অভিযোগের পরই সমীরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে এনসিবি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২১
এনএইচআর