জার্মানিতে প্রায় ১৬ বছর চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করছেন আঙ্গেলা মেরকেল। আর কয়েক দিন পর নতুন চ্যান্সেলর দায়িত্ব নেবেন।
ডয়চে ভেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে দুটি বড় চ্যালেঞ্জ, হতাশা, আফগানিস্তান, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।
অক্টোবরে শেষবারের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেন মেরকেল। সেখানে তাকে ‘কম্প্রোমাইজ মেশিন’ নাম দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমি মেশিন নই, আমি মানুষ। ’
দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কোন কোন সময় বড় সমস্যায় পড়েছিলেন জানতে চাইলে মেরকেল বলেন, ‘দুটি ঘটনা আমার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে। প্রথম (২০১৫ সালে) অনেক বেশি শরণার্থীর আগমন, যেটাকে আমি আসলে ‘সংকট’ নামে ডাকতে পছন্দ করি না- কারণ মানুষ মানুষই। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে করোনা মহামারি।
আফগানিস্তান নিয়ে অন্যরকম প্রত্যাশা ছিল জানিয়ে মেরকেল বলেন, আমরা অবশ্যই খুবই দুঃখিত যে আমরা আফগানিস্তানে যা অর্জন করতে চেয়েছিলাম, তা পারিনি। যেমন আমরা এমন একটা টেকসই রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলাম, যেখানে মেয়েরা স্কুলে যেতে পারবে, নারীরা তাদের ইচ্ছা পূরণ করতে পারবেন এবং শান্তিটা স্থায়ী হবে।
তিনি আরও বলেন, এর দায় শুধুমাত্র জার্মানির একার নয়। আফগানরাও তাদের যা করার কথা ছিল, করেনি। এটা খুবই নিন্দনীয় একটা ব্যাপার।
বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রাখা, কয়লা থেকে জার্মানির সরে আসাসহ নানা বিষয় নিয়ে মেরকেল গর্বিত। তবে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আরও বেশি কিছু করতে না পারায় তিনি সন্তুষ্ট নন বলেও জানিয়েছেন।
মেরকেল বলেন, জার্মানির রাজনৈতিক ব্যবস্থা এমন যে, এখানে কোনো আইন পাস করতে চাইলে আগে ঐকমত্য গড়ে তুলতে হয়। কোনো সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সবসময় বেশিরভাগ মানুষের সমর্থন প্রয়োজন হয়। এই বিষয়টা আমি জলবায়ু অ্যাক্টিভিস্টদের সবসময় বলেছি। তারা আমাকে বলে ‘আপনাকে এখনই এটা করতে হবে’, তখন আমি তাদের বলি, ‘কিন্তু আমাকে তো আগে মেজরিটি পেতে হবে। ’ অনেক প্রত্যাশা ছিল, অনেক ভয়ও আছে। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি, কিন্তু তারপরও আজ আমি বলতে পারছি না যে, ফলাফল সন্তোষজনক।
মেরকেল বলেন, আমি এমানুয়েল মাক্রোঁকে (ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট) মিস করব। আমি আমার সঙ্গে কাজ করা অন্য দেশের অনেক শীর্ষ নেতাকে মিস করব। কারণ তাদের সঙ্গে কাজ করতে আমার অনেক ভালো লেগেছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি মানে হচ্ছে আপনি আরেকজনের সঙ্গে অনেক কথা বলেন, অন্যের জুতা পরে মাইলখানেক হাঁটার চেষ্টা করেন।
চ্যান্সেলর হওয়ায় এতদিন তাকে বিভিন্ন অ্যাজেন্ডা নিয়ে সজাগ থাকতে হয়েছে জানিয়ে মেরকেল বলেন, এখন থেকে আমি আমার ইচ্ছেমতো কাজ করতে পারব। তবে সেটা কী হবে তা এখন থেকে কয়েক মাস পর স্পষ্ট হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, ৮ নভেম্বর, ২০২১
জেএইচটি