সৎমেয়েকে ধর্ষণ ও যৌন নিগ্রহের অপরাধে এক ব্যক্তিকে ৪০ বছর কারাবাসের সাজা দিয়েছেন শিয়ালদহ আদালত।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক (১) চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় এই রায় দেন।
এই মামলার সরকারি কৌঁসুলি উত্তম ঘোষ জানান, দোষী ব্যক্তিকে কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মেয়েটিকে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পকসো মামলায় আগে যাবজ্জীবন ও ২০ বছরের জেল হয়েছে। কিন্তু ৪০ বছর কারাবাসের সাজা এ রাজ্য তো বটেই, গোটা দেশেও বিরল বলে দাবি করেছেন আইনজীবীদের অনেকে।
উত্তমবাবু জানান, শিশুদের ধর্ষণের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন সাজা ২০ বছর কারাবাস। তাছাড়া, আমৃত্যু কারাবাস ও মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। এ দিন আদালতের পর্যবেক্ষণ, যে বাবার কাছে শিশুর স্নেহ-ভালবাসা পাওয়ার কথা, সেই বাবার তরফে এমন নিষ্ঠুর নির্যাতন ঘৃণ্যতম অপরাধ। এই মামলায় বিচার প্রক্রিয়াও অত্যন্ত দ্রুত শেষ হয়েছে।
সূত্রের খবর, ২৩ জুলাই এফআইআর রুজু করা হয়েছিল। কলকাতা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনিমা বিশ্বাস আগস্টে চার্জশিট জমা দেন। মোট ১৩ জন সাক্ষীর বয়ান নেওয়া হয়। আসামিকে হেফাজতে রেখেই গোটা বিচার প্রক্রিয়া হয়েছে বলে সরকারি কৌঁসুলি জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, মেয়েটির বাবা মারা যাওয়ার পরে মা দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন। কিন্তু ২০১৮ সাল নাগাদ তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তখন থেকেই তার সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক শুরু করে তার সৎবাবা।
মেয়েটিকে পুলিশকে জানায়, সে আপত্তি করলে মারধর করে আটকে রাখা হত। চলতি বছরের জুলাইয়ে মেয়েটি সবাইকে বিষয়টি জানানোর কথা বললে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেয় ওই ব্যক্তি। তার পরেই মেয়েটি স্থানীয় এক ব্যক্তিকে ঘটনার কথা জানায়। তিনি মেয়েটিকে থানায় নিয়ে যান।
পুলিশ সূত্রের দাবি, অভিযোগ নথিভুক্ত করার পরে মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছিল। তাতে নিয়মিত ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। মেয়েটি এবং আসামির জামা-কাপড় ও দেহরসের নমুনা সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছিল। কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরির দুই বিজ্ঞানী আদালতে সাক্ষ্যও দিয়েছেন।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২১
এএটি