ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বুঝে গিয়েছেন, ন্যাটো রাশিয়াকে চটাবে না। তাই ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার ব্যাপারে তিনিও কোনো জোর দিচ্ছেন না।
সম্প্রতি এক টিভি সাক্ষাৎকারে এমন কথাই বললেন যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। এছাড়াও সাক্ষাৎকারে রাশিয়াপন্থী দুটি এলাকার বর্তমান অবস্থা নিয়েও তিনি সমঝোতা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগদানের সম্ভাবনায় উদ্বিগ্ন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সে দেশ আক্রমণের আগে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘স্বাধীন’ বলে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। যদিও যুদ্ধের সময়ে অন্তত ২০টি দেশ ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে এখনো প্রকাশ্যে ময়দানে নামেনি ন্যাটো। আর ইউক্রেনের আকাশসীমায় ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা না করায় বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
ভিডিও-বার্তায় তিনি বলেন, ১৩ দিন ধরে শুধু প্রতিশ্রুতির কথা শুনে আসছি। আকাশপথে নাকি আমাদের সাহায্য করা হবে। আমাদের জন্য বিমান পাঠানো হবে। এ বিষয়ে এখনো যারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, রাশিয়ার আক্রমণ থেকে ইউক্রেনের আকাশকে সুরক্ষিত রাখতে পারেননি, দায়িত্ব কিন্তু তাদের ওপরেই বর্তাবে।
পরে এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমরা বুঝে গিয়েছি, ন্যাটো ইউক্রেনকে মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। বিতর্কের ভয় পায় এই জোট। রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতে যেতেও তারা চায় না। তবে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও জেলেনস্কি যে দেশ ছাড়েননি, তা বোঝাতে নিজের বর্তমান ঠিকানা জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
জেলেনস্কি বলেন, আমি কিয়েভের বাঙ্কোভা স্ট্রিটে আছি। আমি লুকিয়ে নেই। কাউকে ভয় পাচ্ছি না। দেশপ্রেমের এই যুদ্ধ জিততে যা যা করার, আমি করব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান যতটা মসৃণ হবে বলে পুতিন ভেবেছিলেন, আদতে তা হচ্ছে না। এখন জেলেনস্কি ন্যাটোরে ওপরে বীতশ্রদ্ধ হলেও ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া বেদখল হওয়ার পর থেকেই ভবিষ্যতের রুশ আক্রমণের কথা ভেবে জোটের সাহায্যে নিজেদের বাহিনীকে ক্রমাগত উন্নত করে গিয়েছে ইউক্রেন।
অন্যদিকে যুদ্ধক্ষেত্রে ঘরের মাঠের চেনা অলিগলিতে অনেক ক্ষেত্রেই ইউক্রেনের সেনারা বেশি সুবিধা পাচ্ছে। দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সাধারণ ইউক্রেনবাসীও অস্ত্র ধরেছেন। এমনকি দেশের হয়ে লড়তে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী থেকে ইউক্রেনের সেনাদের ফিরিয়ে নিচ্ছেন জেলেনেস্কি। উল্টো দিকে ক্রমাগত ক্ষয়ক্ষতিতে রুশ সেনাবাহিনীর মধ্যে মনোবলের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে বলেই খবর।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২২
এনএসআর