ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

ঘোর বিপদে সবাই মুখ ফিরিয়ে নিলেও আল্লাহ সাহায্য করেন

মাহফুজ আবেদ, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৭
ঘোর বিপদে সবাই মুখ ফিরিয়ে নিলেও আল্লাহ সাহায্য করেন আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে- ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক সবই আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করেছে

আল্লাহতায়ালা আমাদের সৃষ্টিকর্তা ও রিজিক দাতা। তার জ্ঞানের বাইরে কোনো কিছুই সংঘটিত হয় না। তার কোনো শরিক নেই, তিনি কাউকে জন্ম দেননি, কারও থেকে জন্ম নেননি। তার সমকক্ষ কেউ নেই, তিনি চিরঞ্জীব এবং চিরস্থায়ী। এই বিশাল পৃথিবী, চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র, গ্রহ, উপগ্রহ, বৃক্ষলতা, মানব-দানব, পশু-পাখি, সাগর-পাহাড় সবকিছু তিনি সৃষ্টি করেছেন।

সৃষ্টি জগতের সবাইকে আল্লাহর ওপর ঈমান আনতে হয়। মুসলমান হিসেবে আমাদের কর্তব্য হলো- আল্লাহতায়ালার একত্বকে মুখে স্বীকার করা এবং অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করা।

তিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই এটা মনেপ্রাণে ধারণ করা।

কোরআন-হাদিসের শিক্ষা মতে ঈমানের দাবি হলো- সবকিছুকে বর্জন করে শুধু আল্লাহর প্রতি দৃঢ় প্রত্যয় স্থাপন করা, তাকে ভালোবাসা, ভয় করা। প্রয়োজনে শুধু আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা, সর্বাবস্থায় তার ওপর ভরসা রাখা। সেই সঙ্গে সর্বদা মনে রাখা, একদিন তার কাছে সবাইকে ফিরে যেতে হবে এবং ভালো বা মন্দ পরিণতি তার ফয়সালার ওপর নির্ভরশীল। ঈমানদাররা কিয়ামতের দিন মহান প্রভু আল্লাহতায়ালার দিদার লাভ করে ধন্য হবেন।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনিই একমাত্র আল্লাহ। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি দৃশ্য-অদৃশ্য এবং উপস্থিত-অনুপস্থিত সব বিষয়ে পূর্ণ জ্ঞান রাখেন। -সূরা হাশর: ২২

অন্যত্র বলা হয়েছে, তিনি সেই আল্লাহ যিনি আসমান ও জমিন এবং এর মধ্যবর্তী স্থানের সব কিছুর সৃষ্টিকারী। তিনি আলিমুল গায়েব। তিনি সব জায়গায় বিরাজমান। তিনি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব কিছুই দেখেন ও খবর রাখেন।

এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, আল্লাহ সকল দৃশ্য-অদৃশ্য ও উপস্থিত অনুপস্থিত সকল বিষয়ে পুরোপুরি জ্ঞাত। মহান আল্লাহই সব প্রাণীর রিজিকদাতা। কোনো সৃষ্টিকেই তিনি রিজিক থেকে বঞ্চিত করেন না। সকল প্রাণী সৃষ্টির পূর্বেই তিনি তাদের রিজিকের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। সব প্রাণীকেই তিনি রিজিক দেন এবং প্রতিপালন করেন।

মহান আল্লাহতায়ালা ক্ষমাশীল। অন্যায় বা ভুল করার তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি ক্ষমা করে দেন। কাউকে তিনি ফিরিয়ে দেন না। পবিত্র কোরআন মজিদে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ গাফুরুর রাহিম। আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল। ’ –সূরা আলে ইমরান: ৩১

আল্লাহতায়ালা এমনই এক সত্তা যার কাছে কোনো কিছু প্রার্থনা করে কেউ বিফল হয় না। মানুষের যা কিছু প্রয়োজন, তা আল্লাহর নিকটই প্রার্থনা করা প্রয়োজন। পবিত্র কোরআনে এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন কোনো প্রার্থনাকারী আমার কাছে প্রার্থনা করে তখন আমি তার প্রার্থনা কবুল করি। ’ –সূ‍রা আল বাকারা: ১৩৬

আল্লাহ বলতে আমরা শুধু অদ্বিতীয় এক সত্তাকে বুঝি। যাকে দেখা যায় না। কিন্তু বিপদে ডাকলে তিনি সাড়া দেন। ঘোর বিপদে যখন কেউ সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে না- তখনও তিনি সাহায্য করেন। আল্লাহতায়ালার শান বলে শেষ করা যাবে না।  

আল্লাহতায়ালা যেহেতু সবকিছুর মালিক, অতএব সকল সৃষ্টি একমাত্র তার হুকুমমতো চলবে। তারই আনুগত্য করবে। ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক আল্লাহর আদেশ মেনে চলতে বাধ্য। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে- ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক সবই আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করেছে। ’ –সূরা আলে ইমরান: ৮৩

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।