কান (ফ্রান্স) থেকে: বাদামি চুলগুলো দেখে একবার মনে হলো গোছানো নয়। আরেকবার ভাবলাম, এভাবেই তো মারিয়ন কতিয়াঁকে ভালো লাগছে।
মারিয়নের সৌন্দর্য থেকে চোখ যেন সরেই না। কালো পোশাকের সুবাদে তার দুধে আলতা গা আরও শুভ্র মনে হচ্ছে। গোলাপি লিপস্টিকে রাঙানো ঠোঁট। সবুজ চোখজোড়ায় চোখ পড়তেই ভেসে উঠলো হাজারও কবিতা। একটু পরপর তার হাসি দেখে যেন মনে হলো ঝরনাধারা দেখছি বুঝি!
রোববার (১৫ মে) কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে দেখানো হয়েছে মারিয়ন অভিনীত 'ফ্রম দ্য ল্যান্ড অব দ্য মুন'। গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়ের ও সাল দুবুসিতে এর প্রদর্শনী হয়েছে সকাল সাড়ে ৮টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টা)।
ছবিটি নিয়ে কথা বলতে সকাল ১১টায় সংবাদ সম্মেলন কক্ষে হাজির হন মারিয়ন। যথারীতি বাইরে লাইনে ও ভেতরে মারিয়নের বসার জায়গার সামনে সব মিলিয়ে এক ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তার দেখা পেতেই মোবাইলের ভিডিও বাটন চেপে দিলাম। এরপর ছবি আর সেলফি তোলার সুযোগ হাতছাড়া করলাম না।
সংবাদ সম্মেলনের আধ ঘণ্টা পেরিয়েছে, ওদিকে সকাল সাড়ে ১১টায় গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে ফের দেখানো হয় ছবিটি। একই স্থানে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়ও এর প্রদর্শনী হবে। এতে দক্ষিণ ফ্রান্সের ছোট্ট একটি গ্রামের মেয়ে গ্যাব্রিয়েলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন মারিয়ন। মেয়েটি আবেগপ্রবণ ও মুক্তমনা। মা-বাবা তাকে স্প্যানিশ খামার কর্মজীবী হোসের সঙ্গে বিয়ে দেন। কিন্তু সংসারে নিজেকে কয়েদির মতো মনে হয় তার। বৈবাহিক জীবনে প্রেমহীন থাকা গ্যাব্রিয়েলা তরুণ লেফট্যানেন্টের প্রেমে পড়ে যান।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী প্রেক্ষাপটে ইতালির মিলেনা আগুসের উপন্যাস অবলম্বনে দুই ঘণ্টা ব্যাপ্তির ছবিটি পরিচালনা করেছেন ফরাসি অভিনেত্রী-নির্মাতা নিকোল গার্সিয়া। এ নিয়ে পরিচালক ও অভিনেত্রী হিসেবে সাতবার কানের প্রতিযোগিতায় স্থান পেলো তার ছবি। ২০০০ সালে তিনি ছিলেন বিচারক প্যানেলে। দুই বছর আগে পালন করেছেন ক্যামেরা দ'র বিভাগের বিচারকদের সভাপতির দায়িত্ব।
সংবাদ সম্মেলনে জানা গেলো, 'ফ্রম দ্য ল্যান্ড অব দ্য মুন'-এ মারিয়নকে পেতে অপেক্ষা করেছেন নিকোল। কেনো তাকেই দরকার ছিলো তা বুঝতে ছবিটি দেখতে হবে। নিকোলের মুখে প্রশংসা শুনতে শুনতে সামনে রাখা প্লাস্টিকের গ্লাসে পানি ঢেলে গিললেন মারিয়ন। ব্যস্ততার কারণে ৪০ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী ভেবেছিলেন কাজটা করবেন না। কিন্তু পরে হ্যাঁ বলে দিলেন!
চরিত্রের জন্য কেমন প্রস্তুতি নেন? এই প্রশ্নের উত্তরে মারিয়ন বললেন, 'অভিনয়টা আসলে প্রেমে পড়ার মতো। প্রেমে পড়তে হয়, বিভিন্ন মানুষের চলা-বলাও পর্যবেক্ষণ করতে হয়। '
আট বছর আগে অলিভিয়ার দাহানের ‘লা ভিয়ে এন রোজ’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য অস্কারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার দেওয়া হয় তাকে। ফরাসি ভাষায় নির্মিত ছবির জন্য কোনো অভিনেত্রীর অস্কার জয়ের এটাই একমাত্র ঘটনা।
ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ইনসেপশন’ (২০১০) ও ‘দ্য ডার্ক নাইট রাইজেস’ (২০১২), উডি অ্যালেনের ‘মিডনাইট ইন প্যারিস’ (২০১১), স্টিভেন সোডারবার্গের ‘কন্টাজিওন’ (২০১১), টিম বার্টনের ‘বিগ ফিশ’ (২০০৩), রিডলি স্কটের ‘অ্যা গুড ইয়ার’ (২০০৬) ছবিগুলোর সুবাদে হলিউডে ফরাসি অভিনেত্রীদের বড় বিজ্ঞাপন হয়ে উঠেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে মারিয়নের অটোগ্রাফ নিতে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। গত আসরে তার 'ম্যাকবেথ' ছবিটি ছিলো প্রতিযোগিতা বিভাগে। সেই সুবাদে অটোগ্রাফ পেয়েছিলাম। এবারও পেলাম। প্রতিযোগিতা বিভাগে এর আগে মারিয়ন অভিনীত ‘রাস্ট অ্যান্ড বোন’ (২০১২) ও ‘টু ডেজ, ওয়ান নাইট’ (২০১৩) অংশ নেয়।
এবারের আসরে মারিয়নের আরও একটি ছবি আছে প্রতিযোগিতা বিভাগে। সেটি হলো হাভিয়ার দোলানের 'ইটস অনলি দ্য অ্যান্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড'। সুতরাং দেখা হবে আবার!
বাংলাদেশ: ০০০২ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৬
জেএইচ/টিআই
** কান ক্ল্যাসিকসে খান আতার ছবি
** নতুন নতুন ও ধ্রুপদী ছবির মিলনমেলা
**বৃষ্টিভেজা কান...
**ঐশ্বরিয়া পেলেন লাল গোলাপের তোড়া
**স্টিভেন স্পিলবার্গের খুব সামনে
** লালগালিচায় তৌকীর-বিপাশা
**প্রস্তুতি ছাড়াই কান মাতালেন ঐশ্বরিয়া
** পাগলা হাওয়ার তোড়ে...
** এই রাত ক্লুনি-আমালের!
***আরাধ্যকে নিয়ে কানে ঐশ্বরিয়া
***জুলিয়া রবার্টসের পায়ে জুতা নেই!
***তোমরা ভুলে গেছো মল্লিকার নাম!
***জুলিয়েট বিনোশকে দেখে চোখ ফেরানো দায়!
***এক প্যাকেট বাদাম দুই ইউরো
**মন কেড়ে নেওয়া গল্পগুলো
**কান উৎসবের বাজেট ২ কোটি ইউরো!
**বাংলানিউজের ক্যামেরাবন্দি জুলিয়া রবার্টস ও জর্জ ক্লুনি
**দেখুন কানে কি না হয়!
** পর্দা উঠলো কান উৎসবের
** হেঁটেছি স্বপ্নের লাল গালিচায়
** শুরুর আগেই জমে উঠেছে লড়াই!
** বিচারকদের সামনে বাংলানিউজ
** সারারাত বৃষ্টির পর ‘ক্যাফে সোসাইটি’
** ইস্তাম্বুলে আইসক্রিম কিনলে ওয়াইফাই ফ্রি!
** ব্যাজের সঙ্গে ব্যাগভর্তি কাগজপত্র দিলেন আয়োজকরা
** কান উৎসবের পর্দা ওঠার অপেক্ষা