ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

আমাদের কাজী নজরুল

মীম নোশিন নাওয়াল খান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৩ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৪
আমাদের কাজী নজরুল

কাজী নজরুল ইসলাম। আমাদের জাতীয় কবি।

বই, পত্রিকা, টেলিভিশনে অনেকবার তার কথা পড়েছ, দেখেছ। তার লেখাগুলোর সঙ্গেও নিশ্চয়ই তোমরা পরিচিত।

আজ ১১ জৈষ্ঠ্য। আমাদের প্রিয় কবির জন্মবার্ষিকী। ১৩০৬ বঙ্গাব্দের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে তার জন্ম।

নজরুলের ব্যাপারে তোমরা প্রায় সবাই জানো। অনেক সংগ্রাম করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন তিনি। তার কষ্টের জীবন, সাহিত্যচর্চা ও নজরুল হয়ে ওঠার গল্প আমাদের কারোরই অজানা নয়। তবুও, যারা জানো না, তাদের জন্য কথাগুলো অল্প করে বলে দিচ্ছি।  

কাজী নজরুল ইসলামের বাবার নাম কাজী ফকির আহমদ এবং মা জায়েদা খাতুন। অল্প বয়সে বাবা-মাকে হারান নজরুল। এরপর শুরু হয় তার কষ্টের জীবন। ছোটবেলা দুঃখে-কষ্টে কেটেছে বলে সে সময়ে তার ডাকমান ছিল দুখু মিয়া।

গ্রামের মক্তবে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে নজরুল যোগ দিয়েছিলেন লেটো গানের দলে। কিছুদিন ছিলেন মক্তবের শিক্ষক। আসানসোলে রুটির দোকানেও কাজ করেছেন তিনি। এরপর সেখান থেকে এক বাঙালি পুলিশ অফিসার তাকে ময়মনসিংহে এনে স্কুলে ভর্তি করেন। দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগদান করেন নজরুল।

যুদ্ধ শেষে কলকাতায় ফিরে এসে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন তিনি। ‘ধূমকেতু’, ‘নবযুগ’ ও ‘লাঙ্গল’ পত্রিকার সম্পাদনাও করেছেন নজরুল।

কাজী নজরুল ইসলামের একটি বিখ্যাত কবিতা ‘বিদ্রোহী। ’ এই কবিতাটি তাকে ব্যাপক খ্যাতি এনে দিয়েছিল। ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ নামক একটি কবিতা লিখে ব্রিটিশ শাসকদের ব্যঙ্গ করেছিলেন তিনি। সেজন্য তাকে কারাভোগ করতে হয়েছিল। কারাগারে থাকা অবস্থায় কবি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বাকশক্তি হারান।

১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গনে তাকে কবর দেওয়া হয়।
কাজী নজরুল ইসলাম অন্যসব লেখার পাশাপাশি ছোটদের জন্যও অনেক লিখেছেন। ছোটদের জন্য তার লেখা কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ঝিঙেফুল, ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি, ঘুমজাগানো পাখি, সঞ্চয়ন। শিশুদের জন্য তার লেখা নাটক- পুতুলের বিয়ে।

নজরুলের জন্মবার্ষিকীতে তার একটি লেখা তো তোমাদের পড়াই উচিত। ‘ঝিঙেফুল’ তার লেখা চমৎকার একটি কবিতা। সেই কবিতাটাই একবার পড়ে নাও-
ঝিঙেফুল
কাজী নজরুল ইসলাম

ঝিঙেফুল! ঝিঙেফুল!
সবুজ পাতার দেশে ফিরোজিয়া ঝিঙে কুল-
ঝিঙেফুল।
গুল্মে পর্ণে
লতিকার কর্ণে
ঢল ঢল স্বর্ণে
ঝলমল দোলে দুল-
ঝিঙেফুল।
পাতার দেশের পাখি বাঁধা হিয়া বোঁটাতে,
গান তব শুনি সাঁঝে তব ফুটে ওঠাতে।
পউষের বেলা শেষ
পরি জাফরানি বেশ
করে তোল মশগুল-
ঝিঙেফুল।
শ্যামলী মায়ের কোলে সোনামুখ খুকু রে
আলুথালু ঘুমু যাও রোদে-গলা দুকুরে।
প্রজাপতি ডেকে যায়-
‘বোঁটা ছিঁড়ে চলে আয়। ’
আসমানে তারা চায়-
‘চলে আয় এ অকুল!’
ঝিঙেফুল।
তুমি বল- ‘আমি হায়
ভালোবাসি মাটি-মায়,
চাই না এ অলকায়-
ভালো এই পথ-ভুল। ’
ঝিঙেফুল।
 
দারুণ একটা কবিতা, তাই না? নজরুলকে স্মরণ করতে বরং তুমি এই মিষ্টি কবিতাটাই আবৃত্তি করে ফেলো।  

ইচ্ছেঘুড়িতে লেখা পাঠান এই মেইলে: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।