ঢাকা: প্রায় ১১ বছর আগে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে সোনালী ব্যাংকের এক কর্মচারীকে অপহরণের পর বিবস্ত্র করে ছবি তুলে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টার মামলায় তিন আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৮ জুন) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. ইকবাল হোসেন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি হলেন—মাহবুব খান, কামরুল খান ওরফে আকাশ এবং ওয়াহিদুর রহমান তুহিন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আসামি ওয়াহিদুর রহমান রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। অপর দুই আসামি পলাতক। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী সোহানুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিকেল ৪টার দিকে সোনালী ব্যাংকের শাহবাগ শাখার কর্মচারী আবুল কালাম আজাদকে ফোন করেন মাহবুব খান। তাকে ব্যাংকের সামনে আসতে বলেন। অফিস সময় শেষ করে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে সেখানে যান আবুল কালাম আজাদ। তখন মাহবুব খানসহ ২-৩ জন তাকে অপহরণ করে রামপুরার ওয়াবদা রোডে একটি বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে। আবুল কালাম আজাদকে বিবস্ত্র করে দুই নারীর সঙ্গে ছবি তোলা হয়। বিভিন্ন জায়গায় ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে মাহবুব ও তার সহযোগীরা।
আবুল কালাম আজাদের পরিবারের কাছে ফোন করে টাকা চাওয়া হয়। তার কাছ থেকে অফিসের ড্রয়ারের চাবি কেড়ে নেয় অপহরণকারীরা। আবুল কালাম আজাদের এক সহকর্মীকে ফোন দিয়ে ড্রয়ার থেকে ৫০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করা হয়। চেকে সই নিয়ে কামরুল যায় টাকা তুলতে। তাকে আটক করে ব্যাংকের কর্মচারীরা। এদিকে আবুল কালাম আজাদের পরিবার ৫ লাখ টাকা নিয়ে গাবতলী এসেছে বলে জানানো হয়। অপহরণকারী আবুল কালাম আজাদকে নিয়ে রাস্তায় বের হলে কৌশলে পালিয়ে যান তিনি।
এ ঘটনায় আবুল কালাম আজাদ ১১ ডিসেম্বর শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল তিনজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক সোহেল রানা।
২০১৪ সালের ১৫ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ৯ সাক্ষীর মধ্যে চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২৩
কেআই/এমজেএফ