ঢাকা: কোনো ধরনের নীতিমালা ছাড়া শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড আরোপ করা প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এক আইনজীবীর করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান।
তিনি জানান, কোনো ধরনের নীতিমালা ছাড়া শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড আরোপ করা কেন অবৈধ বলে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না এবং এ বিষয়ে কেন গাইডলাইন করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুর জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান।
দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর শাস্তি সংক্রান্ত ৫৩ ধারায় বলা হয়েছে, প্রথমত শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যু’।
আর ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৩৬৮ (১) ধারায় মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে, কারও মৃত্যুদণ্ড হলে তাকে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু এ মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংবিধানের ৩২ ও ৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ ছাড়া জাতিসংঘ ঘোষিত ১৯৪৮ সালের মানবাধিকার সনদ, ১৯৬৬ সালের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং ১৯৮৪ সালের নির্যাতনবিরোধী কনভেনশনে মৃত্যুদণ্ডকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ এসব দলিলে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের ১১২টি দেশ মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করেছে।
আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, মৃত্যুদণ্ডের বিধান আমাদের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশসহ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভুটান ও নেপালে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক দলিলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান নিষিদ্ধ করার পক্ষে বাংলাদেশ স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে সেসব দলিল অনুসরণ করাই আন্তর্জাতিক আইনের রীতি। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদেও আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৪
ইএস/আরবি