ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আড়াই বছরের শিশুকে হত্যা: পরকীয়া প্রেমিকসহ মায়ের যাবজ্জীবন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৪
আড়াই বছরের শিশুকে হত্যা: পরকীয়া প্রেমিকসহ মায়ের যাবজ্জীবন

ঢাকা: এক যুগ আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আড়াই বছরের মেয়ে ইসরাত জাহান রিয়াকে খুনের দায়ে মা রোজিনা আক্তার ও তার পরকীয়া প্রেমিক সুলতান মাহমুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন এ রায় দেন।

এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় কারাগারে থাকা আসামি সুলতান মাহমুদকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আসামি রোজিনা আক্তার পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর ফারুক-উজ্জামান ভূঁইয়া (টিপু)। আসামি সুলতানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জাকির হোসাইন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, আড়াই বছরের মেয়ে ইসরাত জাহান রিয়াকে নিয়ে রোজিনা আক্তার ২০১২ সালের ৩ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ডাক্তার দেখাতে যান। আয়া সেলিনা বেগম মেয়েকে নিয়ে ডাক্তারের রুমে প্রবেশে বাধা দেন। এ সময় রিয়াকে তিনি আয়ার কাছে রেখে ডাক্তারের রুমে প্রবেশ করেন। ২০ মিনিট পর রোজিনা আক্তার ডাক্তারের রুম থেকে বের হয়ে মেয়ে রিয়াকে দেখতে না পেয়ে আয়াকে তার মেয়ে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। আয়া তার মেয়েকে দেখেননি বলে জানান।  

এ সময় এক রোগী জানান, কালো কোর্ট পরিহিত এক ব্যক্তি তার মেয়েকে বাবা পরিচয় দিয়ে নিয়ে গেছেন। মেয়েটি তখন অনেক কান্নাকাটি করে। রোজিনা বিষয়টি তার স্বামী নুরুল ইসলামকে জানান। নুরুল ইসলাম সঙ্গে সঙ্গে ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে মেয়েকে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে দুপুর পৌনে ২টার দিকে হাসপাতালের নিউক্লিয়ার আল্ট্রাসাউন্ড সেন্টারের ১২ তলা দালানের ৩য় তলায় মেয়ের মরদেহ দেখতে পান।

এ ঘটনায় ৫ জানুয়ারি নুরুল ইসলাম অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকালে সুলতান মাহমুদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, রোজিনার সঙ্গে পরকীয়া প্রেম ও অনৈতিক সম্পর্কের কারণে রিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন।

মামলাটি তদন্ত করে ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর দুজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা ও অপরাধ বিভাগের পরিদর্শক তপন চন্দ্র সাহা। পরের বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৪
কেআই/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Veet