ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সলঙ্গা গণহত্যা সংঘটনের স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৩ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২৪
সলঙ্গা গণহত্যা সংঘটনের স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের নির্দেশ

ঢাকা: ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা হাটে ব্রিটিশ পুলিশের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ সংঘটনের স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সিরাজগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবীর করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রোববার (২ জুন) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।

রুলে সলঙ্গা গণহত্যা দিবস, ২৭ জানুয়ারিকে জাতীয় দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।  

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন।  

১১ জন আইনজীবী হলেন- মো. আসাদ উদ্দিন, মো. কাওসার আলী, মো. বদরুদ্দোজা বাবু, মো. গোলাম হাসনায়েন, মো. হারুনর রশিদ, মো. গোলাম কিবরিয়া, রোকসানা সুলতানা, জহিরুল হক কিসলু, ব্যারিস্টার মো. আব্দুল বাতেন শেখ, মো. হেকাম আলী শিমুল ও মো. মোরশেদুল ইসলাম।

আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন বলেন, ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি ছিল সলঙ্গা হাটের দিন। সেদিন যুবক আব্দুর রশিদের (যিনি বাংলাদেশ গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ‘মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ’ নামে পরিচিত) নেতৃত্বে সলঙ্গা হাটে চলতে থাকে ব্রিটিশ পণ্য বর্জনের প্রচারাভিযান।  ‘বিলেতি পণ্য বর্জন কর, এ দেশ থেকে ব্রিটিশ হটাও’-স্লোগানে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রচারাভিযান যখন তুঙ্গে তখন কংগ্রেস অফিস থেকে আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সেদিন ব্রিটিশ বেনিয়াদের নৃশংসতার এক রক্তাক্ত অধ্যায় বিরচিত হয় সলঙ্গায়।  

সেদিনের সন্ধ্যার আলো আঁধারিতে সলঙ্গার মাটি নিহত ও আহত মানুষ এবং গৃহপালিত পশুর রক্তে ভেসে যায়। নিহতদের লাশ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় সিরাজগঞ্জের রহমতগঞ্জে। সেখানে তৈরি করা হয় বাংলাদেশের প্রথম ‘গণকবর’। আজও সে ‘গণকবর’ সলঙ্গার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। এছাড়া হোসেনপুর, বাসুদেবকোলসহ সলঙ্গার বিভিন্ন জায়গায় নিহতদের কবরস্থ করা হয়।

মো. আসাদ উদ্দিন বলেন, সলঙ্গা বিদ্রোহের বয়স একশ বছর পার হয়েছে। এত বছর পরও দিবসটি জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা ও একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন না হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য ব্যর্থতা ও লজ্জার বটে। তাই একজন সলঙ্গাবাসী এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে বিষয়টি অত্যন্ত যৌক্তিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় এ রিটটি দায়ের করা হয়।

রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন- মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সংস্কৃতি সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক এবং রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০২৪
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।