ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাগনে-ভাগনিকে হত্যার দায়ে মামার মৃত্যুদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাগনে-ভাগনিকে হত্যার দায়ে মামার মৃত্যুদণ্ড

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে ভগ্নিপতির সঙ্গে টাকা লেনদেনের ক্ষোভে স্কুল পড়ুয়া ভাগনে-ভাগনিকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় বাদল মিয়া নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছের আদালত।  

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আব্দুল হান্নান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বাদল মিয়া কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার খুদাদাউদপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছেলে। ভিকটিম শিফা আক্তার (১৪) ও তার ছোট ভাই মেহেদি হাসান কামরুল (১০) বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের কামাল হোসেনের সন্তান।  

মামলার বিবরণে বাদী কামাল হোসেন উল্লেখ করেন, বাদল বাহরাইনে থাকাকালে দোকানঘর করতে কামালের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা ধার নেয়। এর মধ্যে তিন লাখ টাকা ফেরত দেয়। বাকি ১০ লাখ টাকা ফেরত না দেওয়ায় কামালের সঙ্গে তার মনোমালিন্য চলছিল। ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে বাদলকে এজন্য থাপ্পড়ও মারেন কামাল। সে ক্ষোভে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা থেকে বাদল রোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

মামলায় বলা হয়, ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারির সময় লকডাউন ঘোষণার আগে বাদল দেশে এসে নিজ গ্রামের একটি ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামি হয়ে হত্যাকাণ্ডের অন্তত দুই মাস আগে থেকে বাঞ্চারামপুরের সাহেবনগর গ্রামে ভগ্নিপতি কামালের বাড়িতে অবস্থান নেয়। এ অবস্থায় ওই বছরের ২৪ আগস্ট সোমবার দুপুরে ভগ্নিপতির বাড়িতে তার থাকার কক্ষে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে ভাগনে মেহেদী হাসান কামরুলের হাত-পা বেঁধে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে তার মরদেহ খাটের নিচে রেখে দেয়। এ সময় ভাগনি শিফা ঘর ঝাড়ু দিতে গিয়ে তা দেখে ফেলায় তাকেও মারতে উদ্যত হয় সে। এক পর্যায়ে শিফাকে ধাক্কা মেরে বাথরুমে ফেলে গলা কেটে হত্যা করে তার মরদেহও খাটের নিচে রেখে দেয়।  

এদিকে সন্ধ্যা হওয়ার পরও দুজনকে খুঁজে না পেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয় এবং রাতে থানায় খবর দেওয়া হয়। এরই মধ্যে কামাল উদ্দিন তার শ্যালক বাদল মিয়াকে নিয়ে বাচ্চাদের খোঁজে বাঞ্ছারামপুর ফেরিঘাট এলাকায় গেলে বাদল মিয়া কাউকে কিছু না বলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে বিষয়টি পুলিশের সন্দেহ হলে ২৬ আগস্ট ঢাকার সবুজবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে এ ঘটনায় হত্যা মামলা হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় বাদল।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা বাঞ্ছারামপুর থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাজু আহমেদ  ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম বলেন, মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজু আহমেদ আসামি বাদলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দের পর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেলাল হোসেন সাক্ষীদেরকে যথাযথভাবে উপস্থাপনের কারণে বিজ্ঞ আদালত দ্রুত এ মামলার রায় দিতে সক্ষম হয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়ধ ১৫২২ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।