ঢাকা: ছাত্র-জনতার আন্দোলন প্রতিহত করার নামে গণহত্যা, হেলিকপ্টার থেকে গুলি, গুলিতে শিশু ও মানুষের মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক নিরপেক্ষ তদন্ত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে শিশু ও নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতে বিগত সরকারের ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেছেন।
আদালতে রিটের পক্ষে রিটকারী আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো.আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্তি অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজিব।
আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, আদালত রুল জারি করেছেন। এছাড়া অন্তর্বর্তী ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ দেওয়ার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন-সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। সেদিন পরবর্তী আদেশের জন্য আসবে।
তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত ১৩ শিশু হত্যার বিষয়ে তথ্য পেয়েছি।
এ বিষয়ে দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে ৩১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার জনস্বার্থে এ রিট করেন।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে গুলির ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশনা এবং শিশুদের জন্য ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে ।
রিটে যুক্ত করা দৈনিক সমকালে ২৯ জুলাই প্রকাশিত ‘ফুল হয়ে ফোটার আগেই ঝরলো ওরা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, আহাদ, রিয়া, সামির, হোসাইন, মোবারক, তাহমিদ, ইফাত ও নাঈমা নামের ফুলের মতো শিশুগুলো সবে ফুটছিল। তবে আর বিকশিত হতে পারেনি। বুলেটের আঘাতে ছোট্ট জীবনগুলো ঝরে গেছে কুঁড়িতেই। বাবার কোলের মতো নিরাপদ আশ্রয়েও তাদের আঘাত করেছে ঘাতক বুলেট। আবার কারফিউ মেনে ঘরের কোণে থেকেও কারও জীবনসৌরভ মুছে গেছে বারুদের গন্ধে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে কয়েক দিনের সংঘর্ষে অন্তত ৯ শিশু গুলিতে নিহত হয়েছে। তাদের বয়স ৪ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। ১৮, ১৯ ও ২০ জুলাই তারা গুলিবিদ্ধ হয়। নিহত চারজন মারা গেছে নিজ বাড়িতেই। চারজন গুলিবিদ্ধ হয় সড়কে। সব ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে প্রাণ গেছে এই শিশুদের। এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে গুলিবিদ্ধ এমন কিছু শিশু।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা,আগস্ট ১৫,২০২৪
ইএস/এমএম