ঢাকা: দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্যাম্পগুলোর বাইরে অবৈধভাবে বসবাসরত উর্দুভাষী অবাঙালিদের (বিহারি) উচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত পৃথক নয়টি রিট আবেদন মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) খারিজ করেন বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতের রায়ে ক্যাম্পে বসবাসরতদের মধ্যে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে তাদেরকে পর্যায়ক্রমে পুনর্বাসন করতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এএফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান খান প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদা পারভীন পপি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ক্যাম্পে বসবাসরত উর্দুভাষী অবাঙালিদের উচ্ছেদের আশঙ্কায় ২০০২ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন উর্দু স্পিকিং পিপলস ইউথ রিহাবিলিটেশন মুভমেন্টের (ইউএসপিওয়াইআরএম) সভাপতি মো. সাদাকাত খান (ফাক্কু) ও শহিদ আলী বাবলু।
রিট আবেদনে বলা হয়, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পে অমানবিক জীবনযাপন করে আসছেন প্রায় ৪ লাখ উর্দুভাষী। ১৯৯৫ সাল থেকে এসব উর্দুভাষীদেরকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র শুরু হয়।
এর অংশ হিসেবে ২০০২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশন মিরপুরের পল্লবীতে প্রায় ৩৯টি ছোট-বড় ক্যাম্প বিনা নোটিশে উচ্ছেদের কার্যক্রম গ্রহণ করে।
এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরই রিট দায়ের করা হয়। হাইকোর্ট এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ক্যাম্পে বসবাসরতদের পুনর্বাসন বা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উচ্ছেদ কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন।
পরবর্তীকালে ক্যাম্পে বসবাসরতদের উচ্ছেদ নিয়ে আরো ৮টি রিট মামলা হয়।
এসব রিটে জারি করা রুলের শুনানি একসঙ্গে হাইকোর্টে অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানি শেষে সোমবার (২৮ মার্চ) থেকে রায় ঘোষণা শুরু হয়। মঙ্গলবার পর্যবেক্ষণ সহকারে রিট আবেদনগুলো খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদা পারভীন পপি বলেন, আদালত ৯টি রিটের ওপর জারিকৃত রুল কয়েকটি পর্যবেক্ষণ সহকারে খারিজ করে দেন। এর ফলে আনঅথরাইজড বিহারিদের উচ্ছেদে কোনো আইনগত বাধা নেই।
আবেদনকারীদের আইনজীবী হাফিজুর রহমান খান বলেন, রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীর বিহারি ক্যাম্প, মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প, নীলফামারীর সৈয়দপুরের বিহারি ক্যাম্পের বাইরে সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে যারা বাস করছেন তাদের উচ্ছেদে বাধা নেই। তবে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে সরকারের নীতি অনুযায়ী তাদেরকে পর্যায়ক্রমে পুনর্বাসন করতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৬
ইএস/এএসআর