ঢাকা: ইতিহাসের ভয়াবহতম রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় ৪১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়ে আগামী ১৩ জুন পুনর্নির্ধারণ করেছেন আদালত।
রোববার (১৫ মে) মামলাটির অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে নয়তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়লে ১ হাজার ১৩৬ জন মারা যান। আহত হন ১ হাজার ৫শ’ ২৪ জন।
ভবন ধসে প্রাণহানির এ ঘটনায় সে সময় 'অবহেলাজনিত মৃত্যুর' অভিযোগে একটি মামলা করেন সাভার থানার এসআই ওয়ালী আশরাফ। এছাড়া ইমারত বিধি মেনে রানা প্লাজা নির্মাণ করা হয়নি- এমন অভিযোগে রানাসহ ১৩ জনকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় আরেকটি মামলা করেন রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল আহমেদ।
হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনের মামলা দু’টির তদন্ত করে গত বছরের ১ জুন পৃথক দু’টি চার্জশিট দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সিনিয়র এএসপি বিজয় কৃষ্ণ কর।
হত্যা মামলায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা ও তার বাবা-মাসহ ৪১ জনকে ও ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মাহবুবুল আলম নামক একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীকে ইমারত নির্মাণ মামলায় আসামি করা হলেও দণ্ডবিধির মামলায় আসামি করা হয়নি। ফলে দু’টি মামলা মিলিয়ে আসামি হয়েছেন মোট ৪২ জন।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক ও মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার মেয়র আলহাজ রেফাত উল্লাহ, কাউন্সিলর মোহাম্মাদ আলী খান, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, নিউওয়েব বাটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, নিউওয়েব স্টাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম, সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. সারোয়ার কামাল, আবু বক্কর সিদ্দিক, মো. মধু, অনিল দাস, মো. শাহ আলম ওরফে মিঠু, মো. আবুল হাসান, সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, নগর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সাবেক উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. আব্দুস সামাদ, উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. জামশেদুর রহমান, উপ-প্রধান পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, পরিদর্শক প্রকৌশল মো. ইউসুফ আলী, মো. শহিদুল ইসলাম, ইমারত পরিদর্শক মো. আওলাদ হোসেন, ইথার টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস, মো. শফিকুল ইসলাম ভূইয়া, মনোয়ার হোসেন বিপ্লব, মো. আতাউর রহমান, মো. আব্দুস সালাম, বিদ্যুৎ মিয়া, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জনি, রেজাউল ইসলাম, নান্টু কন্ট্রাক্টর, মো. আব্দুল হামিদ, আব্দুল মজিদ, মো. আমিনুল ইসলাম, নয়ন মিয়া, মো. ইউসুফ আলী, তসলিম ও মাহবুবুল আলম।
হত্যা মামলার চার্জশিটে বলা হয়েছে, ভবনে ফাটল থাকায় যেকোনো সময় তা ধসে মৃত্যু হতে পারে জেনেও ওইদিন শ্রমিকদের বাধ্য করা হয়েছিল ভবনে প্রবেশ করতে। আর তারই ফলশ্রুতিতে ভবন ধসে শ্রমিকদের মৃত্যু হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৬
এমআই/এএসআর