ঢাকা: ‘মীর কাসেম আলী যে ডালিম হোটেলের হর্তা-কর্তা ছিলেন, জসীম ওখানে মারা গেছে, তা তারা নিজেরাই অস্বীকার করেন নাই’।
ফাঁসির রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে রোববার (২৮ আগস্ট) এমন মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেমের ওই রিভিউ আবেদনের আদেশের দিন আগামী মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) ধার্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও মোহাম্মদ বজলুর রহমান।
আসামিপক্ষে মীর কাসেমের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে মাহবুবে আলম শুনানি করেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, ‘সাক্ষী নাই বলে আসামি পক্ষের বক্তব্য ঠিক না। কারণ, মীর কাসেম যে ডালিম হোটেলের হর্তা-কর্তা ছিলেন, জসীম ওখানে মারা গেছে (১১ নম্বর অভিযোগ), তা তারা নিজেরাই অস্বীকার করেন নাই। যারা অত্যাচারিত হয়েছেন, প্রত্যেকেই মীর কাসেম আলীর কথা বলেছেন। ১২ নম্বর অভিযোগেও মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড হতো, যদি প্রসিকিউশন ঠিকমতো মামলাটি পরিচালনা করতেন’।
‘আদালত আমাকে বলেছেন, আদালত তাদের রায়ে কয়েকটা কমেন্ট করেছেন, তাদেরকে (ব্যর্থ প্রসিকিউটরদের) কেন এখনো সরানো হয়নি? আমি আদালতকে বলেছি, বিষয়টি আমি সরকারের গোচরে আনবো’।
মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আশা করি, তার (মীর কাসেম) দণ্ড বহাল থাকবে’।
মাহবুবে আলম আরও বলেন, ‘এটা ঠিক বলা যাবে না, তারা যেটা বলতে চান যে, তিনি একজন দানশীল ব্যক্তি। আমি আদালতে বলেছি, তিনি ২৫ লাখ ডলার দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন, এটা আমি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, যা আসামিপক্ষ অস্বীকার করেননি। কোনো ব্যক্তি যিনি বিচারকে বন্ধ করতে পন্থা অবলম্বন করতে বিদেশি লবিস্ট নিয়োগ করতে পারেন, এই ধরনোর ব্যক্তি কোনো রকম ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য না’।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে গত ০৮ মার্চ মীর কাসেম আলীর মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার সংক্ষিপ্ত আকারে চূড়ান্ত রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত। রায়ে শহীদ কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনসহ ছয়জনকে হত্যা-গণহত্যার দায়ে ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানবতাবিরোধী অপরাধের মূল হোতা মীর কাসেম আলীর।
গত ০৬ জুন ২৪৪ পৃষ্ঠার পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। গত ১৯ জুন ৬৮ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদন করেন মীর কাসেম আলী। এতে ফাঁসির রায় বাতিল করে খালাস ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আরজি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে আলবদর বাহিনীর তৃতীয় এই শীর্ষনেতা।
রিভিউ আবেদনে সর্বোচ্চ সাজার বিরুদ্ধে মোট ১৪টি যুক্তি দেখানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৬
ইএস/এএসআর