ঢাকা: বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারের ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায়ের দুই প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
৪৬টি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন ও শাহ মোহাম্মদ আশিকুল মোরশেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর।
২০০৭ সালের ২৮ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং অপরাপর বিশ্ববিদ্যালয় যাহারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নয়, তাদের উদ্ভূত আয়ের উপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর পুনঃনির্ধারণ করা হলো। ১ জুলাই থেকে এটা কার্যকর হবে’।
২০১০ সালের ১ জুলাই এনবিআরের আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা কেবলমাত্র তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত বেসরকারি কলেজ ও উদ্ভূত আয়ের উপর প্রদেয় আয়করের হার হ্রাস করে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো’।
এরপর বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলোজি, আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, চিটাগাং, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেডেন্ট ইউনিভার্সিটি, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি।
রিট আবেদনের পক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আদালত ওই দু’টি প্রজ্ঞাপনকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি ওই দুই প্রজ্ঞাপন অনুসারে যে অর্থ আদায় করা হয়েছে, তা ফেরত দিতে এনবিআরকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
লিখিত বক্তব্যে আবেদনকারীদের আইনজীবীরা বলেন, আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদে জীবনের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। যার মধ্যে শিক্ষার অধিকারও পড়ে। শিক্ষার অধিকার তরুণ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার। সরকার সংবিধানের ১৫, ১৭ ও ১৯ অনুচ্ছেদে বর্ণিত সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনেও ব্যর্থ হয়েছে, যেখানে মূল প্রয়োজনগুলোর কথাও বলা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৬
ইএস/এএসআর