ঢাকা: রাজধানীর শাহজাহানপুরে পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার ৬ আসামির জামিন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শাতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান ২৬ অক্টোবরের মধ্যে লিখিতভাবে এর জবাব দাখিলের নির্দেশ দেন।
গত ২০ অক্টোবর সাক্ষী দিতে আদালতে ৫ জন সাক্ষী হাজির হন। এদের মধ্যে ২ সাক্ষী সাক্ষ্য দিলেও ৩ সাক্ষী সাক্ষ্য না দিয়ে কাউকে না জানিয়ে চলে যান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পিপি শওকত আলম আদালতে দরখাস্ত দিয়ে বলেন, আসামিপক্ষে প্রভাবিত হয়েই হয়তো সাক্ষীরা সাক্ষ্য না দিয়ে চলে গেছেন। সেক্ষেত্রে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার জন্য আসামিদের জামিন বাতিলের আবেদন করেন তিনি।
মঙ্গলবার আবেদনটির উপর শুনানি গ্রহণ করেন আদালত।
বিচারক তার আদেশে উল্লেখ করেন, সাক্ষীরা সাক্ষ্য না দিয়ে চলে যাওয়া এবং মঙ্গলবার আদালতের সাক্ষ্য দিতে না আসায় পিপি’র বক্তব্য যুক্তিসঙ্গত মনে হয়। তবে আসামিরা জামিনে মুক্ত থাকায় এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে পিপি’র আবেদনের উপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া দরকার।
এরপর তিনি পিপি’র আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামিদের জামিন কেন বাতিল করা হবে না সে মর্মে ২৬ অক্টোবরের মধ্যে লিখিতভাবে কারণ দর্শাতে আসামিদের নির্দেশ দেন।
গত ৪ অক্টোবর আসামি প্রকৌশলী আব্দুস সালাম ওরফে শফিকুল ইসলামসহ ৬ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন একই আদালত।
আসামিরা হলেন- প্রকৌশলী আব্দুস সালাম ওরফে শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম, কমলাপুর রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন, ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ার আবু আহমেদ শাকি, সহকারী প্রকৌশলী দিপক কুমার ভৌমিক এবং অপর সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম।
গত ৩১ মার্চ ডিবি পুলিশের উপ পরিদর্শক মিজানুর রহামন আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, এসআর হাউজ নামক প্রতিষ্ঠান শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনির মৈত্রী সংঘ মাঠের পূর্ব দক্ষিণ কোনে একটি পানির পাম্পের ঠিকাদারি নিয়া অনুমান ৬শ ফুট কুপ খনন করেন। কিন্তু কুপের মুখ খোলা রেখে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না করে অবহেলা ও তাচ্ছিল্য ভরে তা দীর্ঘদিন ফেলে রাখা হয়। ফলে শিশু জিহাদ (০৩) ওই স্থানে খেলা করতে গিয়ে পাইপের ভেতরে পরে গিয়ে মারা যায়।
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুরে বাসার কাছে রেলওয়ে মাঠের পাম্পের পাইপে পড়ে যায় জিহাদ। প্রায় ২৩ ঘণ্টা পর ২৭ ডিসেম্বর বিকেল তিনটার দিকে জিহাদকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত জিহাদের বাবা নাসির ফকির ফৌজদারি আইনের ৩০৪/ক ধারায় ‘দায়িত্বে অবেহেলায়’ জিহাদের মৃত্যুর অভিযোগে শাহজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৬
এমআই/এসএইচ