ঢাকা: বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৫ এবং বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতি বিষয়ক ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি দায়ের করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
১১৬ অনুচ্ছেদ নিয়ে সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ‘সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে ‘দ্বৈত শাসন’ বিচার বিভাগের কাজে বিঘ্ন ঘটায়’।
আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, স্পিকার ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে।
রিট দায়েরের পরে ইউনুছ আলী বলেন, ‘বাহাত্তরের মূল সংবিধানে ১১৬ অনুচ্ছেদে অধস্তন আদালতের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব ছিলো সুপ্রিম কোর্টের। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ৪র্থ সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্টের পরিবর্তে ওই ক্ষমতা দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতির কাছে। এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’।
‘এছাড়াও সংবিধানের ৯৫(গ) অনুচ্ছেদে আইন তৈরি সাপেক্ষে বিচারপতি নিয়োগের বিধান থাকলেও সংসদে কোনো আইন ছাড়াই দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এটিও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’।
এদিকে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তবে বিচারের ক্ষেত্রে মামলার জট কমাতে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে একমত মন্ত্রী।
নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকের নবম বর্ষপূর্তিতে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাণীতে সোমবার (৩১ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের অধস্তন সব আদালত ও ট্রাইব্যুনালের ওপর সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে’।
‘অন্যদিকে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বিচার বিভাগের ধীরগতির অন্যতম কারণ। ১১৬ অনুচ্ছেদের ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি, বদলি এবং শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে এককভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ‘দ্বৈত শাসনের’ ফলে বহু জেলায় শূন্যপদে সময়মতো বিচারক নিয়োগ প্রদান সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিচারকাজে বিঘ্ন ঘটে। এবং বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি বেড়ে যায়’।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৬
ইএস/এএসআর