ঢাকা: ইচ্ছা পোষণ করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব পালন এবং গভর্নিং বডির বিশেষ কমিটির বিধান অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে।
রোববার (৬ নভেম্বর) এ বিষয়ে আদেশের জন্য ৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
পরে ইউনুছ আলী জানান, আজকে শুনানি শেষ হয়েছে। আগামীকাল (সোমবার) আদেশের জন্য দিন রেখেছেন।
“শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, এমপিরা স্থানীয় নির্বাচিত প্রতিনিধি। তাই তাদের সভাপতি পদে থাকতে কোনো অসুবিধা নেই” জানিয়ে তিনি বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধ্যাদেশে (১৯৬১) এমপিদের বিষয়ে কিছু নেই। তাই তারা থাকতে পারবেন না।
কমিটি প্রবিধানমালা ২০০৯ এর ৫ (২) এবং ৫০ ধারাকে বাতিল করে রায় দেন বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এর ফলে বিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা স্কুল-কলেজের গভর্নিংবডির সভাপতি হতে পারবেন না বলে জানান রিট আবেদনকারীর আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দ।
তিনি বলেন, এমপিদের পদে থাকার বিধান ও বিশেষ কমিটির বিধান নিয়ে আপিল বিভাগে ভিকারুন্নিসা ও অন্যদের আবেদন কার্যতালিকায় রয়েছে।
হাইকোর্টে রিট আবেদনের পর আইনজীবী ইউনুছ আলী জানিয়েছিলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধানমালা ২০০৯-এর ৫ ও ৫০ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিলো। এর মধ্যে ৫ ধারা হচ্ছে এমপিদের সভাপতি পদ ও ৫০ ধারা হচ্ছে বিশেষ কমিটি গঠন নিয়ে। আদালত দু’টি ধারাই সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে বাতিল ঘোষণা করেছেন।
এ রায়ের পর জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করে পদ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলো সংসদ সদস্যরা।
এরপর ১৯ অক্টোবর সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে পর জানানো হয়, সংসদ সদস্যরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে থাকতে পারবেন না বলে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন, মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে আপিল করার প্রস্তুতি নিয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধ্যাদেশের (১৯৬১) আওতায় ‘মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০০৯ এর ৫ ধারা (গভর্নিংবডির সভাপতি মনোনয়ন) এর (১) উপ-বিধিতে বলা হয়েছে, ‘কোনো স্থানীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্য তার নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এমন সংখ্যক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির দ্বায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবেন’।
‘(২) উপ-বিধান ১ এর অধীন সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের জন্য স্থানীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্য, তার নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত যেসব উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণ করতে ইচ্ছুক তার উল্লেখসহ লিখিতভাবে এ প্রবিধানমালার অধীন বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করবেন এবং এ অভিপ্রায়পত্র সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানগুলোর সভাপতি হিসেবে তার মনোনয়ন হিসেবে গণ্য হবে’।
৫০ ধারায় বলা হয়েছে, ‘বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটি- বিশেষ পরিস্থিতিতে বোর্ড এবং সরকারের পূর্বানুমোদক্রমে, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের কোনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ক্ষেত্রমতে ম্যানেজিং কমিটি করা যাবে’।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৬/১৪২৮ ঘণ্টা.
ইএস/এটি