ঢাকা: হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন দুর্নীতির মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কক্সবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে করা বদির আপিল আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (১৬ নভেম্বর) ছয়মাসের অন্তর্বর্তীকালীন এ জামিন মঞ্জুর করেন।
আপিল আবেদন আদালতে উপস্থাপনের সময় বদির জামিনের আবেদন জানান তার আইনজীবী মাহবুব আলী এমপি ও নাসরিন সিদ্দিকা লীনা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
পরে নাসরিন সিদ্দিকা লীনা বলেন, আমরা আদালতে বলেছি, সামনে সংসদ অধিবেশন আছে। আবদুর রহমান বদি একজন সংসদ সদস্য। তাকে সংসদে যোগ দিতে হবে। তাছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে যদের কম সাজা, তাদেরকে জামিন দেওয়ার রেওয়াজ আছে।
আদালত বিচারিক আদালতের ১০ লাখ টাকা জরিমানা স্থগিত করেছেন বলেও জানান লীনা।
গত ১০ নভেম্বর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন বদির আইনজীবী।
সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে গত ০২ নভেম্বর এমপি আবদুর রহমান বদিকে ৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের আদালত। একই সঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদণ্ডাদেশ পেয়েছেন তিনি।
সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দু’টি ধারায় মামলাটি করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের ধারাটি আদালতে প্রমাণিত হয়নি এমপি বদির বিরুদ্ধে।
আদালতে হাজির ছিলেন বদি। রায়ের পর পরই সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাকে। রায় ঘোষণার আগে চার্জশিটের ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
২০১৪ সালের ২১ আগস্ট এমপি আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলাটি করেন দুদকের উপ-পরিচালক আবদুস সোবহান।
২০০৮ ও ২০১৩ সালে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে সম্পদের তথ্য গোপনপূর্বক মিথ্যা তথ্য প্রদান ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া তার হলফনামার সূত্র ধরে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আব্দুর রহমান বদি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার ৬৬৯ টাকা মূল্যমানের সম্পদ গোপন করে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। এছাড়া অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের বৈধতা দেখানোর জন্য কম মূল্যের সম্পদ ক্রয় দেখিয়ে ১ কোটি ৯৮ লাখ ৩ হাজার ৩৭৫ টাকা বেশি মূল্যে বিক্রি দেখানোর অভিযোগে এ মামলা হয়।
অভিযুক্তের সম্পদ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখতে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তারা রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানি, সংশ্লিষ্ট জেলা রেজিস্ট্রার অফিস, এনবিআর, বিআরটিএ, রাজউক, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, রিহ্যাব, ব্যাংক-বিমাসহ অন্যান্য অফিসে অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করে সম্পদের হিসাব বের করেছেন। পাশাপাশি অভিযুক্তের নিজ নির্বাচনী এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শন করেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
** ৩ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে এমপি বদির আপিল
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
ইএস/এসএইচ/এএসআর